এবার থাই গেম ও ভিসা চক্রের সদস্যরা লাঠি সোটা নিয়ে দফায় দফায় থানায় আক্রমণের চেষ্টা করেছে। এসময় থানাসহ পার্শ্ববতী এলাকায় আতংক সৃষ্টি হয়। ওয়ারেজ আলী নামে এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ করতে আসলে তাদেরকে মারপিট করার জন্য ওই চক্রের সদস্যরা শুক্রবার রাত সাড়ে দশটায় দু’ দফায় থানার ভিতরে ঢুকে তাদেরকে আক্রমণের চেষ্টা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান- রাত সাড়ে দশটার দিকে প্রায় শতাধিক ছেলে হাতে লাঠি সোটা নিয়ে থানার দিকে গিয়ে তারা ধর ধর চিৎকার করে থানার ভিতরে প্রবেশ করে। অপর দিকে থানার ভিতরে থাকা কিছু লোক থানার মূলভবনে ছুটে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সদস্য তাদের বাঁধা দিয়ে পিছনে হটিয়ে দেয়। পরে তারা তাদের দলে আরও কিছু লোকজন জড়ো হলে আবারও তারা থানায় ওইসব লোকের উপর ধর ধর ও বিভিন্ন গালিগালাজ করতে করতে থানার প্রধান ফটক দিয়ে থানার ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় থানার পার্শ্ববতী দোকানসহ এলাকায় আতংক সৃষ্টি হয়। অনেকে দোকানের সাটার বন্ধ করে রাখে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয় টার দিকে মুশরুতপানিয়ালপুকুর গ্রামের মাহফুজার রহমানের পুত্র ওয়ারেজ আলী বাড়ী থেকে উপজেলার দিকে আসার সময় আমতলী মোড়ে তার গতিপথ রোধ করে থাই গেম ও ভিসা চক্রের হোতা বেনজির তার দলবল নিয়ে। এসময় তার পকেটে থাকা ১ লক্ষ টাকা পকেট থেকে বের করে নেয়। এ সময় ওয়ারেজের চিৎকারে আঃ রউফ ও সালাম নামে দু্’জন এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেধড়ক মারপিট করাসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা করে।
ওয়ারেজ আলী জানান- এ ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ করতে আসলে বেনজিরের নেতৃত্বে থাই গেম ও ভিসা চক্রের সদস্যরা আমাদের মারার জন্য লাঠি সোটা নিয়ে রাত দশ টার টার দিকে প্রথমে আক্রমণের চেষ্টা করে। এসময় তারা থানার ভিতরে লাঠি সোটাসহ দেশীয় অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে আমাদের খুঁজতে থাকে। থানা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন তাদের পিছনে হটিয়ে দেয়। এরপর ওই চক্রের সদস্যরা আবারও রাত সাড়ে দশটার দিকে থানায় আমাদের উপর আক্রমণের চেষ্টা করে ও গালিগালাজ করে। তিনি আরও জানান- থানার ভিতরে আমাদের মারার জন্য আসলেও পুলিশ নিরব ছিল। ওয়ারেজ আরও জানায়- আমার গতিপথ রোধ করে ছিনতাই ও মারপিটের ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।
রউফ জানান- আমার ভাগিনা সম্র্পকে ওয়ারেজকে গতিপথ রোধ করে মারপিট করে তখন আমি এগিয়ে গেলে আমাকেও মারপিট করে বেনজির। পরে মাগরিবের নামাজ পড়তে যাওয়া আমার বড় ভাই সালামকে প্রতারক চক্রের হোতা বেনজির মারপিট করে। থানায় অভিযোগ করতে আসলে থানায় আমাদেরকে দু দফায় মারপিটের জন্য তারা আসে।
অন্যদিকে এ ঘটনার পর বেনজিরের বাবা আব্দুল মালেক গাড়ি ভাংচুর ও টাকা চুরির অভিযোগ এনে চারজনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে।
থানা আক্রমনের কথা শুনে সাধারণ মানুষ সেখানে ছুটে আসে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে স্থানীয় লোকজন ও থানা পুলিশ আক্রমণকারীদের হটিয়ে দেয়। পুলিশের দাবী কৌশলে তাদের হটিয়ে না দিলে বড় ধরণের দূঘর্টনা ঘটার আশংকা ছিল।
কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান- একটি পক্ষ থানায় অভিযোগ করতে আসলে তাদের উপর আক্রমণ করার জন্য অপর পক্ষ আক্রমণের চেষ্টা করে। আমরা কৌশলে পরিস্থিতি শান্ত করেছি, না হলে বড় ধরণের বিশৃংখলা ঘটার আশংকা ছিল। বিষয়টি উর্দ্ধতন কতর্ৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
উল্লেখ্য যে, ক’দিন আগে থাই গেম ও ভিসা প্রতারক সাহাবুল শ্রমিক থেকে কোটিপতি শিরোনামে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ওই চক্রের সদস্যরা স্থানীয় সাংবাদিকদের হুমকী দেয়। এ নিয়ে সাংবাদিকরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। সংবাদের জের ধরে সাহাবুলকে পুলিশ গ্রেফতার করলে আবারও সাংবাদিকদের হুমকি দেয়। কিশোরগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ অন্য থাই গেম ও ভিসা প্রতারকদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে।