মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বসতবাড়ির গৃহের তালা ভেঙ্গে সিএনজি চুরির ঘটনার দশ দিন পার হয়ে গেলেও উদ্ধার করা হয়নি ভুক্তভোগী অসহায় আবুল হোসেনের সিএনজি। উক্ত ঘটনায় উপজেলার জাফরনগর ইউপির হামিদপুর গ্রামের হীরা খানের ছেলে আবুল হোসেন বাদী হয়ে জুড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সিএনজি চুরির ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার ২৪ জানুয়ারী দুপুরে জুড়ী থানা পুলিশ ও সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মাছুম রেজা ও ইউপি সদস্য আজাদ মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার থ-১৩-২৩৭৩ সিএনজি গাড়ীটি বাদীর মা ছমরুন নেছা মালিক। উক্ত সিএনজি গাড়ীর চালক আবুল হোসেন প্রতিদিনের ন্যায় গত ২৩ জানুয়ারী সারা দিন গাড়ীটি চালিয়ে রাত অনুমান ১১:০০ ঘটিকার সময় বসতঘরের সামনে গ্যারেজে গেটের তালা দিয়ে রাখেন। রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে প্রচুর কুয়াশা থাকার কারণে আবুল হোসেনের পরিবারের সবাই যার যার কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন।
পরদিন ২৪ জানুয়ারী সকাল অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার সময় আবুলের বড় ভাই এমএ শুকুর খান সবার আগে ঘুম হইতে উঠিয়া বর্ণিত সিএনজি গাড়ীটি বের করার জন্য গ্যারেজে গিয়া গাড়ীটি যথাস্থানে না দেখে তখন শুক্কুর খান হাক-ডাক করিলে আবুল হোসেন ও তার মা ঘুম থেকে উঠিয়া গ্যারেজে আসিয়া দেখতে পান গাড়ীটি নাই।
আবুলদের শোর-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে বসতবাড়ী সহ আশপাশে সিএনজি গাড়ীটি খোঁজাখুজি করতে থাকেন। পরবর্তীতে আবুলের বসতবাড়ীতে থাকা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করিলে দেখা যায় যে,২৪ জানুয়ারী রাত অনুমান ০৩:৪০ ঘটিকার সময় অজ্ঞাতনামা চোর/চোরেরা আবুলদের বসতবাড়ীর মেইন গেইটের তালা কৌশলে ভাঙ্গিয়া ভিতরে প্রবেশ করিয়া রাত অনুমান ০৩:৫০ ঘটিকার সময় সিএনজি গাড়ী নিয়া বসতবাড়ী হইতে বাহির হয়ে যাচ্ছে। আবুল বলেন, আমাদের সবার ধারণা যে, ২৪ জানুয়ারী রাত অনুমান ০৩:৪০ ঘটিকা হইতে রাত অনুমান ০৩:৫০ ঘটিকার মধ্যবর্তী যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা চোর/চোরেরা সঙ্গোপনে রাতের আধারে আমাদের বসতবাড়ীর মেইন গেইটের তালা ভাঙ্গিয়া গ্যারেজ হইতে বর্ণিত সিএনজি গাড়ীটি চুরি করিয়া নিয়া যায় যার সিএনজি গাড়ীর মূল্য অনুমান পাঁচ লক্ষ টাকা।
প্রকাশ থাকে যে, বর্ণিত সিএনজি গাড়ীটি খোঁজাখুজি করা অবস্থায় ২৪ জানুয়ারী সকাল অনুমান ১০:৩০ ঘটিকার সময় অপরিচিত মোবাইল নম্বর ০১৮৭৪-৬৭৪৯৯৩ হইতে আমার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৭৩৮-২৭৯৬২৮ ফোন করিয়া জানায় যে বর্ণিত সিএনজি গাড়ীটি তাহাদের হেফাজতে আছে। বিকাশ নম্বর ০১৮৭৪-৬৫৯৯২১ তে পঞ্চাশ হাজার টাকা বিকাশ প্রদান করিলে তাহারা বর্ণিত গাড়ীটি ফেরত দিবে।
এদিকে ঘঠনার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও অসহায় আবুলের সিএনজি উদ্ধার না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হামিদপুর গ্রামের হাফিজ জিয়াউর রহমান (শিক্ষক), সিএনজি চালক মাছুম আহমদ, এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ, আতা খাঁন, লেবু খান বলেন ১০ দিন আগে ইরা’খাঁনের বাড়ী থেকে একটা সিএনজি চুরি হয়েছে আমরা কয়েকদিন ধরে দেখতেছি উনারা অনেক খোঁজাখুঁজি করতেছে কিন্তু সিএনজি টা পাচ্ছে না। জুড়ী থানার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কারী বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানান, অসহায় এই দেশের নাগরিক হিসাবে ইরা’খাঁনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার। পুলিশ চাইলে প্রযুক্তির মাধ্যমে গাড়ীটি উদ্ধার সহ জড়িতদের আটক করা সম্ভব।
সিএনজির চালক আবুল হোসেন বলেন এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ২৪ জানুয়ারী রোজ শুক্রবার রাতে আমার সিএনজি অটোরিকশা টি চুরি হয়ে যায়। সিএনজি টি অনেক খুজা খুজির পর জুড়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি কিন্তু দুঃখের বিষয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে এখনও কোন আশ্বাস পাইনি।
এবিষয়ে জুড়ী থানার এসআই কবির মিয়া জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তাঁরা ঘটনার জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, আবুল হোসেনের অভিযোগ পেয়েছি চুরি হওয়া সিএনজিটি উদ্ধারের জন্য পুলিশ তৎপর আছে ও গতকাল গ্রেপ্তারকৃতরা মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্যদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নিকট থেকে চোরচক্রের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ও চোরচক্র সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে গ্রেপ্তারকৃতদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হচ্ছে।