চট্টগ্রাম অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে কাজীর দেউড়িস্থ এম এ আজিজ স্টেডিয়ামস্থ জিমনেশিয়াম চত্বরে। বিগত সময়ের সিটি করপোরেশনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসর কয়েক কর্মকর্তা বইমেলা নিয়ন্ত্রণ করবে বলে কানাঘুঁষা চলছে। বিগত সময়েও তাদের নিয়ন্ত্রণে বইমেলা হওয়ায় মঞ্চের আশেপাশে ভালো লেখক কবি সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের ভুমিকা ছিলো অপ্রতুল। মগড়া চেতনালীগের বাহিরে ভালো মানের লেখক কবি সাহিত্যিকদের দেখা মিলেনি বলেও বিতর্ক থেকেই যায়। গত বইমেলায় সুবিধা আদায় ও এক পক্ষীয়ভাবে সিটি করপোরেশন পদক দেওয়া নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়। আর সেই বহাল তবিয়তে থেকে গেলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বইমেলা কমিটির আহবায়ক শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে ও চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর এই বইমেলা হয়ে থাকে, একই নিয়মে প্রস্তুতি সভাও হয় মেলার ১০ দিন আগে। পূর্বের নিয়মে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারী) বিকালে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রকাশক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবেন্দের সমন্বয়ে বইমেলার প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রস্তুতি সভা শুরু হওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয় বিকাল ৪ টায়, সেখানে দেড় ঘন্টা পর প্রস্তুতি সভা শুরু হয়। প্রস্তুতি সভায় আসা সম্মানিত ব্যাক্তিবর্গরা বিরক্তিকর হয়ে উঠে।
প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথি চসিক মেয়ের ডা.শাহাদাত হোসেন বই প্রকাশকদের সাথে একমত পোষণ ও রাজনীতি মুক্ত সার্বজনীন থাকবে বলে প্রস্তুতি সভা থেকে ১৩ মিনিটের মাথায় বিদায় নেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বইমেলা কমিটির আহবায়ক শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠান চলে।
সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন শাহ্ আলম নিপু বলেন বিগত সময়ে বইমেলা চলাকালীন মঞ্চ দখলে নিতো রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও কাউন্সিলারদের সাঙ্গপাঙ্গরা, সেদিকে দৃষ্টি দিতে বলছেন। প্রস্তুতি সভা উপস্থিতদের মধ্যে কানাঘুঁষা শুরু হয়ে যায় বিগত সময়ে তো উনি (সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন শাহ্ আলম নিপু) দায়িত্ব ছিলো তখন এসব কথা বলেননি কেনো।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বইমেলা কমিটির আহবায়ক শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম আলোচনার মধ্যে বলেন মেলায় যাহাতে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এটা হলে সিটি করপোরেশনের দুর্নাম হবে। আবারও টেবিলে কানাঘুঁষা শুরু হয়, বিগত সময় ও গতবছর কি বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। একক আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদ ছত্রছায়ায় বইমেলা হয়ে থাকে।
প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম, শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি ও বইমেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. সাহাব উদ্দীন হাসান বাবু, সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস, সমাজ কলাণ কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ।
অন্যান্য লেখক প্রকাশক ও সাহিত্য-সংস্কৃতি কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন শাহ্ আলম নিপু, লেখক সাংবাদিক ওমর কায়সার, নাজিমুদ্দীন শ্যামল, মিজানুর রহমান শামীম, ড. সৌরভ শাখাওয়াত, মুহাম্মদ নুরুল আবসার, ফারজানা রহমান শিমু, ফাহমিদা রহমান, শারুদ নিজাম, মিনহাজুল ইসলাম মামুন, আলোক মাহমুদ, অধ্যাপক রুহ রাহুল, সুব্রত কান্তি চৌধুরী, আরিফ রায়হান, কামরুন নাহার লিজা, আবু নাছের মুহাম্মদ তৈয়ব আলী, মিশফাক রাসেল, আলমগীর শিপন, এম হোসাইন, ফরিদ বঙ্গবাসী, হাসান মুকুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। এবং অনেকের নামও বাদ যায়।
সিটি করপোরেশন জনসংযোগ কর্মকর্তার মেইল থেকে বইমেলার প্রেসরিলিজ সব পত্রিকার মেইলে পাঠানো হয়, সেখানে দেখা শুধু মেয়ের ডা.শাহাদাত হোসেন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বইমেলা কমিটির আহবায়ক শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম দুইজনের একটা ছবি দেওয়া হয়।
প্রস্তুতি কমিটির টেবিলে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য সচিব ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মো. সাহাব উদ্দীন হাসান বাবু, সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস, লেখক সাংবাদিক ওমর কায়সার, কবি ও সাংবাদিক নাজিমুদ্দীন শ্যামল সহ সিনিয়র অনেকে সামনের দিকে ছিলো এতে কারোই কোনো গ্রুপ ছবি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়েও প্রকাশক সমিতির মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকে দায়ী করছে এটা সুকৌশলে হ্যাও করার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বইমেলা কমিটির আহবায়ক শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমদ’র কারচুপি হতে পারে বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত একজন জানান ফ্যাসিবাদ দোসররা সুকৌশলে কাজগুলো করছে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে বেকায়দায় ফেলতে এবং জনগণের সামনে কলুষিত করতে। অনুষ্ঠানে আসা নাস্তার আয়োজনেও ছিলো বৈষম্যতা। প্রস্তুতি সভায় থাকা প্রায় ২০ জনের মতো স্কুল শিক্ষক, কবি, সম্মানি ব্যাক্তিরা নাস্তা পায়নি তাৎক্ষণিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার কে বিষয়টি জানানো হয়।