গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি ও গণধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, “দেশের সঠিক নেতৃত্ব ও দেশপ্রেমের চেতনা নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের মাতৃভূমির স্বার্থ রক্ষায় যোগ্য নেতৃত্ব ও দৃঢ় নীতির বিকল্প নেই।”
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী মহাবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর বলেন, “আমরা এক ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা হটিয়ে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করেছিল, ভবিষ্যতে কোনো সরকার যাতে এমন করতে না পারে, সেজন্য জনগণকে সচেতন থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতের আশীর্বাদপুষ্ট আওয়ামী পরিবারতন্ত্র দেশকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছিল। সেই অন্যায়ের জবাব ছাত্র-জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।”
নুর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ফেলানি হত্যার বিষয়েও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “১৪ বছরেও সীমান্তের ফেলানি হত্যার বিচার হয়নি, যা আমাদের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমরা এই অন্যায় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।”
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে নুর বলেন, “এই সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য। যদি তারা এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তবে তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না। গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই।”
সভায় গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সচিব মাসুদ রানা মোন্নাফ, রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে এরশাদ সিদ্দিকীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারোয়ার ও কুড়িগ্রাম জেলার আমির আব্দুল মতিন ফারুকীও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা এবং কুড়িগ্রাম জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন কামাল সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
সভায় স্থানীয় জনগণ ও নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্র সুরক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। তারা বলেন, “দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে সঠিক নেতৃত্বে ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়া জরুরি। যোগ্য নেতৃত্বই আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।”
এই মতবিনিময় সভা কুড়িগ্রামের জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে এবং গণতন্ত্র ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।