জাতীয় পরিচয়পত্রে মানুষের মুখচ্ছবি বাদ দিয়ে শনাক্তকরণের উপায় হিসেবে আঙ্গুলের ছাপ বা বিকল্প কোনো পদ্ধতি চালুর দাবিতে রাজারবাগ দরবার শরীফের ‘মহিলা আনজুমানে’র ব্যানারে মানববন্ধন করেছেন একদল নারী।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের পাশাপাশি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা।
এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি না মানা হলে ‘কঠোর আন্দোলনে’র হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় ওই মানববন্ধন থেকে।
তাদের দাবি, নারীরা ছবি তুললে ‘গুনাহ’ হওয়ার পাশাপাশি ‘বেপর্দা’ হতে হয়। আর পর্দানশীন নারীদের এনআইডি ‘আটকে রেখে’ নির্বাচন কমিশন ‘গুনাহ করতে বাধ্য করছে’।
দেশে প্রথম বারের মত ২০০৭-২০০৮ সালে দেশে ছবিসহ ভোটার তালিকার কাজ শুরু হয়।
লিখিত বক্তব্যে মহিলা আনজুমানের সদস্য সচিব সুমাইয়া আহমাদ মুনা বলেন, “১৬ বছর যাবত ইসির কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তা মুখচ্ছবির অজুহাতে পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছে, যা এক প্রকার মানবতাবিরোধী অপরাধ। এতে পর্দানশীন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে নিদারুণ কষ্ট করছেন।
“যে বা যারা গত ১৬ বছর যাবত পর্দানশীন নারীদের মানবাধিকার হরণ করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই। আমরা ধর্মীয় অধিকার এবং প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুন্ন রেখে এনআইডির দাবি জানাচ্ছি।”
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়ে সংগঠনের সদস্য সচিব বলেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে দাবির পক্ষে দেশব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মাঠে নামবে।”
তিনি বলেন, “একজন নারী ছবি তুললে দুটি গুনাহ হয়। একটি ছবি তোলার গুনাহ, অন্যটি বেপর্দা হওয়ার গুনাহ। আমরা গুনাহ থেকে বাঁচতে চাই। ইসি আমাদের সে গুনাহ করতে বাধ্য করতে পারে না।
“আমি আমার চেহারা কাউকে দেখাব না, এটা আমার গোপনীয়তার অধিকার। পর্দানশীন নারীদের দাবি শুধু ধর্মীয় অধিকারের মধ্যে পড়ে না, প্রাইভেসির অধিকারের মধ্যেও পড়ে। আমাদের দাবি মানবাধিকার ও সংবিধানিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।”
এনআইডি ছাড়া পর্দানশীন নারীরা ‘মৌলিক ও নাগরিক অধিকার হারিয়েছে’ অভিযোগ করে সদস্য সচিব সুমাইয়া আহমাদ মুনা বলেন, “এনআইডি ছাড়া পর্দানশীন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রি করতে পারছেন না।
মুখচ্ছবি ছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা অন্য কোনো মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের শনাক্তকরণের ব্যবস্থা রাখার দাবি করে তিনি বলেন, “এনআইডির মুখচ্ছবি পরিবর্তনযোগ্য। এ থেকে প্রমাণিত হয়, মুখচ্ছবি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নয়। অথচ সেই মুখচ্ছবির অজুহাতেই পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করা হচ্ছে।
“এছাড়া ছবি দিয়ে শনাক্তকরণ দুর্নীতিবান্ধব পদ্ধতি, অপরদিকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে শনাক্তকরণ দুর্নীতিরোধক পদ্ধতি।”