চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বর্ষা এলেই চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি পুরনো কীর্তন। তবে এটার পুরোপুরি সমাধান খুঁজতে চার উপদেষ্টাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে আগামী ১৯ জানুয়ারি জলাবদ্ধতা নিরসনের পদক্ষেপ নিতে সেই চার উপদেষ্টা মিটিং করবেন চট্টগ্রামে।
তিনি মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে লালদিঘীর পাড়স্থ চসিক পাবলিক লাইব্রেরীর সম্মেলন কক্ষে দুঃস্থ শীতার্থদের মাঝে বিতরণের জন্য নগরীর থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মাঝে কম্বল বিতরণকালে এসব কথা বলেন।
চসিক মেয়র বলেন, সিডিএর ৩৬টি খালের যে প্রকল্প ছিল, সেটি বাড়ানো হচ্ছে। সামনের প্রকল্পে ৫৭টি খাল আওতাভুক্ত হবে। এতদিন আশা ছিল জলাবদ্ধতার যে সমস্যা সেটির ৬০ শতাংশ কাজ হলে সমাধান পাব। এবার যেহেতু ৫৭টি খাল হচ্ছে সেই হিসেবে জলাবদ্ধতার সমস্যার ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ সমাধান পাব বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি, যেই ২১টি খাল বাদ আছে, এসবের কারণে জলাবদ্ধতা পুরোপুরি যাবে না। শেষপর্যন্ত সেই বার্তা প্রধান উপদেষ্টা পর্যন্ত পৌঁছেছে। তাই সকল উপদেষ্টাদের ডেকে বিশেষভাবে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার জন্য চারজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। যেখানে শুধু জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্যই ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামে একটি বিশেষ মিটিং হবে।
আগামী নির্বাচনে যারা কাউন্সিলর প্রার্থী হতে ইচ্ছুক তাদের ফোকাস করার জন্য এখনই মোক্ষম সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আর বেশিদিন নেই। হাতে আছে আর একটি বছর। যারা কমিশনার নির্বাচন করতে চান তারা স্ব স্ব ওয়ার্ডে নালা নর্দমা পরিস্কার এবং মশার স্প্রে এগুলোর জন্য এখন থেকে এ কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করবেন। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন অভিযানে নিজেরা গিয়ে সবকিছু দেখিয়ে দিবেন। কারণ, ফোকাস করার এটাই সুযোগ।
তিনি বলেন, চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মী আছে, আপনারাও (বিএনপি নেতা) নিজেদের কিছু কর্মী সৃষ্টি করে তাদের এ কাজের আওতায় আনেন। সামনে বর্ষাকাল আসবে, এখন নালা খাল পরিস্কার করবেন বেশি। চসিকের যেই খাল পরিস্কার করার লোক আছে তাদের সাথে থেকে দেখিয়ে দিবেন। তাই এটা নিয়ে আপনাদের কাজ করার সুবর্ণ সুযোগ। এটা দলের ভাবমূর্তিও বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, আপনি যখন দলের একজন নেতা হিসেবে কাজ করতে থাকবেন তখন সাধারণ মানুষও দেখবে যে বিএনপি জনগণের পক্ষে কাজ করছে, জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। যেখানে যেখানে মশার উৎপাত বেশি সেগুলো নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানাবেন। মশার স্প্রে হচ্ছে কিনা, মেশিন ঠিকমতো আছে কিনা এসব দেখভাল করবেন।
তিনি বলেন, ওয়ার্ড সচিবদের সঙ্গে কথা বলবেন, তারা জন্ম নিবন্ধন সঠিক সময়ে দিচ্ছে কিনা। তাদের সঙ্গে ঝামেলা করার দরকার নেই। শুধু জানতে চাইবেন দিতে কেন দেরি হচ্ছে। সেসব বিষয়গুলো নোট করে আমাকে দিবেন। তখন তাদের আমি তলব করে জিজ্ঞেস করবো।
তিনি বলেন, রাস্তাঘাটের যে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আছে, সেই প্রকল্পের অধীনে বড় বড় রাস্তার কাজ শুরু হয়ে যাবে। আর যেখানে খানাখন্দ আছে, সেখানে দ্রুত কাজ করার জন্য আমাদের তালিকা করে দিবেন। বিশেষ করে আগ্রাবাদ, মোগলটুলি এলাকায়, কমার্স কলেজের সেদিকে যারা আছেন, তারা আরো জোড়ালোভাবে ভূমিকা রাখবেন। যাতে করে আমি ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে খুব দ্রুত কাজ করাতে পারি। আর কাজ যেহেতু চলছে, তাই চাই এ কাজ চলমান থাকুক। এটার জন্য একটা বিশাল বাজেট দিয়েছি।
ডা. শাহাদাত হোসেনের রাজনৈতিক সচিব জিয়াউর রহমান জিয়ার পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহবায়ক কমিটির সদস্য হাজী মো. সালাউদ্দীন, মো. কামরুল ইসলাম, মশিয়ুল আলম স্বপন, মোশাররফ হোসেন ডেপটি, মো. আজম, ইসমাইল বালি, থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, আবদুস সাত্তার সেলিম, মো. সেকান্দর, আবদুল্লাহ আল হারুন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, জাহিদ হাসান, মো. শাহাবুদ্দীন, হাজী বাদশা মিয়া, জসিম উদ্দিন জিয়া, মনির আহম্মেদ চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া, কাওসার হোসেন বাবু, মহানগর মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী সহ ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।