কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী ত্রিবেণী এলাকায় গভীর রাতে এলাকাবাসীর হামলার শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইবি ছাত্র শিবির, ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র মৈত্রীর নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেন।
রোববার (১২ জানুয়ারী) রাত দশটার দিকে পরীক্ষা শেষ হওয়া উপলক্ষে ত্রিবেণী এলাকায় মিষ্টি খেতে যায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ১৪ জন শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান রাত বারোটার দিকে মিষ্টি খেয়ে তাদের মধ্য থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী আগেই ক্যাম্পাসে ফেরত আসে। বাকী ৯ জন রাস্তার কালভার্টে বসে আড্ডা দিতে থাকে। এমন সময় হঠাৎ বাইক দিয়ে ৪-৫ জন লোক এসে তাদের গালি দিতে থাকে এবং বলতে থাকে, “এতো রাতে তোরা এখানে কি করিস?” তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিলেও তাদের কথায় কর্ণপাত না করে বলে যে, “এটা ১৭৫ একর না।” তারপর তারা শিক্ষার্থীদের এলোপাথাড়িভাবে মারতে শুরু করে। তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গুরুতরভাবে আহত করে। এসময় শিক্ষার্থীরা দৌড়ে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে গিয়ে কয়েকজন আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়েও তাদের উপর হামলা করে। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী আশেপাশের ফসলের ক্ষেতে দৌড়ে পালায়। এ অবস্থায়ই তারা ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জানালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং তাদের উদ্ধার করে।
পরে তাদের উদ্ধার করে ক্যাম্পাসে আনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
এবিষয়ে উদ্ধারকারী শিক্ষার্থীদের একজন ত্বকী ওয়াসিফ বলেন, “হামলাকারীদের অতি সত্তর আইনের আওতায় আনা হোক। এই ধরনের ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি।”
এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার প্রধান সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীরা যদি কোনো আইননানুক ব্যাবস্থা নিতে চায় তাহলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের পূর্ণ সহযোগীতা করবে।” বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, ঘটনা শোনার পর থানায় অবহিত করেছি এবং ঐ জায়গায় কে বা কারা জড়িত চিহ্নিত করতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে বলেছি। ইবি থানা ইতোমধ্যে জায়গাটা নজরদারিতে রাখছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে।
উল্লেখ্য ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার এলাকাবাসীর হামলার শিকার হয়েছে ইবি শিক্ষার্থীরা।