দীর্ঘ দুই যুগ অচল থাকা বগুড়া বিমানবন্দর পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা আগামী রোববার সরেজমিনে বিমানবন্দরটি পরিদর্শন করবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বগুড়া বিমানবন্দর চালু করতে প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে। এটি প্রথমে অভ্যন্তরীণ রুটে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরিদর্শনের পর সংশ্লিষ্টরা বিমানবন্দর চালুর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।
বগুড়া বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ প্রথম নেওয়া হয় ১৯৮৭ সালে। ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে বিএনপি সরকারের সময় প্রকল্পটি চূড়ান্ত করা হয় এবং ১৯৯৫ সালে সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় ১০৯ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০০০ সালে রানওয়ে, অফিস ভবন ও আবাসিক ভবনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়। কিন্তু বিমানবন্দরটি বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়নি। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এটিকে বিমানবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে।
গত সরকারের সময় এ বিমানবন্দর চালুর প্রস্তাবনা নিয়ে একটি কমিটি কাজ করে, কিন্তু সেটি কার্যকর হয়নি। এবার সেই প্রতিবেদন পুনরায় বিবেচনায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বগুড়া বিমানবন্দর চালু হলে উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি ও পর্যটনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। প্রতিবছর গড়ে ৫ হাজার বিদেশি পর্যটক বগুড়ার দর্শনীয় স্থান, বিশেষত মহাস্থানগড় পরিদর্শনে আসেন। এছাড়া, জেলার ২০টি শিল্পকারখানা, যেমন এসেনশিয়াল ড্রাগস, ওয়ান ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ট্রান্সকম প্রভৃতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সহায়তা পাবে।
বিমানবন্দর পুনরায় চালু করতে কিছু জমি অধিগ্রহণ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন হবে। তবে স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন বিশেষজ্ঞদের মতে, বগুড়ায় বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালুর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বিদ্যমান।
বেবিচক চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, রোববারের পরিদর্শনের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বগুড়া বিমানবন্দর চালু হলে এটি দেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য একটি বড় মাইলফলক হয়ে উঠবে।
