বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জিয়া সাইবার ফোর্স (জেসিএফ) এর পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) শাখার ১৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করেছে। ১৩ সদস্যের কমিটির ৫ জনই নিষিদ্ধ সংগঠন পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
গতকাল (৭ জানুয়ারী) মঙ্গলবার জেসিএফের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেওয়ান মুহাম্মদ আলফাজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল আউয়াল তালুকদার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বকুলকে এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. ওলিউল্লাহকে।
কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ক্রীড়া সম্পাদক ও সামাজকর্ম বিভাগের ১০ম ব্যাচের ছাত্র মো: আশিক কবির। ২ নং যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুর ইসলাম বাবুর অনুসারী ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো: রাকিবুল ইসলাম রাতুল, ৩নং যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ হোসেন অনুসারী ও টিএইচএম ১৪ তম ব্যাচের ছাত্র মো: রুহুল আমিন। সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পান পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক মেহেদী হাসান রেইনের অনুসারী ও ইতিহাস ১৪ তম ব্যাচের ছাত্র সাইফ সরকার এবং পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: নুরুল্লাহর অনুসারী ও টিএইচএম ১৫ তম ব্যাচের ছাত্র মো: ইমরান হোসেন।
জিয়া সাইবার ফোর্সের কমিটিতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পদ পাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের এক যুগ্ম-আহ্বায়ক বলেন, ‘৫ তারিখের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতি শুরু করেছে। নিজেদের গ্রুপে লোক বাড়াতে এখন অনেকেই নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দলে ভিড়াচ্ছে, বিভিন্ন সংগঠনে পদ দিয়ে তাদেরকে খুশি রাখছে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী নেতার কারণে সংগঠনের ইমেজ নষ্ট হতে শুরু করেছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ। কিন্তু ছাত্র সংগঠনগুলো নামে বেনামে সংগঠন খুলে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের রাজনীতি করে যাচ্ছে। জিয়া ফোর্সের কমিটি দেখে আমি অবাক হয়েছে। যে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের সেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরই এরা পদ দিয়ে ক্যাম্পাসে পূনর্বাসিত করছে।’
এ বিষয়ে জানার জন্য জিয়া সাইবার ফোর্সের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভপতি দেওয়ান মোহাম্মদ আলফাজ উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক রবিউল আওয়াল তালুকদারকে মেসেজ দিলে তারা কোন উত্তর দেননি। বিশ্ববিদ্যালয় জিয়া ফোর্সের বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘আমি যতটুকু খোঁজ খবর নিয়েছি তাতে ওরা যে ছাত্রলীগ করতো সেই রকম কোন তথ্য পাইনি। আর আশিকের বিষয় হলো ও আমার এলাকারই, ওর পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। ক্যাম্পাসে হলে থাকার জন্য ও হয়তো এতোদিন কৌশল অবলম্বন করেছে।’