বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনার কুলে নৌকার নোঙরের আঁচড়ে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় নদীর তীরে ডাম্পিং করা বালুভর্তি জিও ব্যাগ ছিঁড়ে ক্ষতি করছে মাঝি-মাল্লারা। এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধ এলাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে বহমান যমুনা নদী। প্রতি বছরই দফায় দফায় নদী ভেঙে তীরবর্তী বিভিন্ন অবকাঠামো, আবাদি জমি ও বসতবাড়ি বিলীন হয়।
এই ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ করে। ২০১১ সালে থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। পর্যায়ক্রমে ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ তীর এলাকায় ভাঙনরোধে কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ কাজের অংশ হিসেবে নদীর তীরের বালুমাটি স্লোপ করে তার ওপর জিও ব্যাগ বিছানো হয়।
আবার কোথাও কোথাও নদীর ভাঙন স্থান মেরামতের জন্য মাটি স্লোপ করে তার ওপর বালুবর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবল স্রোতে ভাঙন শুরু হলে জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। এই জিও ব্যাগ গুলো নদী তীরে ডাম্পিং এর পর থেকে শত বছর টেকসই হওয়ার কথা।
এভাবে নদীর তীরে বালুভর্তি জিও ব্যাগ এবং সিসি ব্লক ডাম্পিং করায় ভাঙনরোধ হয়েছে।
আজ সোমবার (৬ জানুয়ারি) সরেজমিন যমুনা নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায়, যমুনা নদীতে প্রতিদিন পণ্যবাহী ও যাত্রী পরিবহনের জন্য চলাচল করছে শত শত নৌকা। নদীর তীর থেকে এসব নৌকা বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে। মাঝি-মাল্লারা এসব নৌকা নদীর কুলে নোঙর করেছে। তারা নৌকা গুলোর নোঙর (লোহার তৈরি) নদীর কুলের বালুভর্তি জিও ব্যাগের সঙ্গে আটকে রেখেছে।
এতে করে ফালার ন্যায় নোঙরের আঁচড়ে জিও ব্যাগ ছিঁড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে ব্যাগ থেকে বালু বের হয়ে পড়ছে। ফলে ছেড়া জিও ব্যাগগুলো আর টেকসই হচ্ছে না। বর্তমানে নদীতে পানি নেই তাই এর বিরূপ প্রভাব চোখে পড়ছে না। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রবল স্রোতে ছেড়া জিও ব্যাগগুলো ভাটির দিকে ভেসে যাবে। তখন ডান তীর রক্ষা বাঁধ ভেঙে নদীতে বিলীন হবে।
আরও পড়ুন:লন্ডনে খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হচ্ছেন যারা
যমুনা তীরের নৌকার মাঝি-মাল্লারা জানান, নদীর কুলে নৌকা আটকে রাখার জন্য নোঙর ব্যবহার করা হয়। এতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ গুলো ছিঁড়ে কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। তবে এভাবে নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ক্ষতি হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই। যমুনা নদীর ঘাটে নৌকা বেধে রাখার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করছে বলে জানান তারা।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, ‘এ বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’