কুড়িগ্রামে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।অন্যন্য বছরের তুলনায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অসহায় কৃষক সমাজের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে ফসলের উৎপাদনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি শীতবস্ত্রের অভাবে পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
কুড়িগ্রামের কৃষকদের বেশিরভাগই আলু, সরিষা, ও ধানের মতো রবি ফসল চাষ করে থাকেন। তবে তীব্র ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে ফসলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে আলুর পাতায় রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। একদিকে ফসল নষ্টের শঙ্কা, অন্যদিকে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার ভীতি কৃষকদের হতাশার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
কুড়িগ্রামের বেশিরভাগ কৃষকই দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ। তাদের অনেকেরই পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র নেই। পুরনো কাপড় দিয়ে কোনো রকমে শীত নিবারণের চেষ্টা চলছে। শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ভুগছেন। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খড়কুটো বা কাঠ সংগ্রহ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে উষ্ণতা রক্ষা করা এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে কুড়িগ্রামের কৃষকদের জন্য কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অনেকেই অভিযোগ করছেন, এই সহায়তা প্রকৃত অসহায় কৃষকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।
কৃষকদের জন্য দ্রুত ত্রাণ কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ, সেচের জন্য সহজলভ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ, ও ফসল সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন এবং এনজিওগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে, যেন অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো যায়।
কুড়িগ্রামের এই শীতল বাস্তবতায় কৃষক সমাজ এক কঠিন সময় পার করছে। তাদের পাশে দাঁড়ানো এখন রাষ্ট্রের তথা সমাজের সবার নৈতিক দায়িত্ব।