Homeজাতীয়খালেদা জিয়া-সেনাপ্রধান বৈঠকের খবর নিযে বিস্ফোরক প্রতিবেদন প্রকাশ আনন্দবাজারের

খালেদা জিয়া-সেনাপ্রধান বৈঠকের খবর নিযে বিস্ফোরক প্রতিবেদন প্রকাশ আনন্দবাজারের

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৃহস্পতিবারের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাথে সাক্ষাৎকার নিয়ে বিস্ফোরক মূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কলকাতা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার প্রত্রিকা।

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির টানাপড়েনের আবহে খালেদা-ওয়াকারের এই বৈঠক খুবই ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিএনপি প্রধানের ‘প্রেস উইং’-এর সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ৪০ মিনিট দু’জনের কথা হয়েছে। খালেদার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজলে এলাহি আকবরও হাজির ছিলেন বৈঠকে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এদিকে বিএনপি এবং কট্টরপন্থী দল ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত)-র সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জামাতের ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, আমি জামায়াতে ইসলামীর কাছে জানতে চাই, একাত্তরে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল? আপনারা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন? আপনারা কোন সেক্টর কম্যান্ডারের অধীনে যুদ্ধ করেছেন?

ক্ষমতার পালাবদলের পরে জামাত নেতৃত্ব নিজেদের ‘একমাত্র দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল’ বলে তুলে ধরতে চাইছে বলে অভিযোগ করে রিজভি বলেন, এমন কথা বলবেন না। সকলে হাসবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইউনূসের জমানায় জামাতের প্রভাব ক্রমশ বাড়তে থাকায় অসন্তুষ্ট বিএনপি।

বিশেষত, অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা পদে জামাত-ঘনিষ্ঠদের নিয়োগ এবং নির্বাচন ঘিরে টালবাহানার জেরে সেই অসন্তোষ আরও বেড়েছে। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে রিজভির বক্তব্যে। ইতিহাস বলছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামাত নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে পাকিস্তান সেনার পক্ষে কাজ করেছিলেন। রাজাকার ঘাতকবাহিনীর নেতা হিসাবে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে একাধিক জামাত নেতার বিরুদ্ধে।

শেখ হাসিনা জমানায় কয়েক জনের সাজাও হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগের মতোই মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যবাহী বিএনপিও। খালেদার স্বামী তথা বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পাক সেনার প্রথম বাঙালি অফিসার হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন।

ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ইউনূস সরকার নানা টালবাহানা করে জাতীয় সংসদের নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে বলেও ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আবার সেনাবাহিনীর ‘ভূমিকা’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। শেখ হাসিনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেনারেল ওয়াকারের ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। ব্রিটেনের প্রখ্যাত কিংস কলেজের এই প্রাক্তনী এক সময় হাসিনার প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ছিলেন। দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে তিনি সিদ্ধহস্ত। খালেদার সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।

সর্বশেষ খবর