Homeজেলাচাকরি না করেও শিক্ষিত যুবকের বাজিমাত

চাকরি না করেও শিক্ষিত যুবকের বাজিমাত

অন্য সবার মতো সোনার হরিণের চাকরির পেছনে ছোটেননি তিনি। নিজে কিছু করার প্রত্যয়ে ঝিনাইদহে গড়ে তুলেছেন বাণিজ্যিকভাবে ব্যতিক্রমী কুমড়াবড়ি তৈরির কারখানা। গ্রামের দুস্থ-অসহায় প্রায় ৩০ জন নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান করেছেন অজপাড়াগাঁয়ে। স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু এ বড়ি পৌঁছে যাচ্ছে দেশের প্রায় সব বিভাগে।

এমন এলাহীকাণ্ড না দেখলে বিশ্বাস হবে না। ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার শিক্ষিত যুবক ওয়াহিদ হাসানের কুমড়া বড়ি তৈরির কারখানায় গেলেই চোখ কপালে উঠে যাবে।
স্বামীহারা আলেয়া খাতুন বলেন, গত প্রায় ৫ বছর এখানে কাজ করছি। বাড়ির পাশে হওয়ায় আসতে ও যেতে কোনো অসুবিধা হয় না। কেউ পান ১৫০ টাকা আবার কেউ পান ৩০০ টাকা।
কমলা বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা প্রায় ৩০ জন কাজ করি। দৈনিক মজুরিতে কাজ করি। কাজের ওপর নির্ভর করে পারিশ্রমিক ধার্য করা হয়। ভোর থেকে সকাল ১২টা পর্যন্ত। আমাদের সংসারেরও কোনো সমস্যা হয় না। আরও বাড়তি আয় হওয়ায় পরিবার খুশি।


আরও পড়ুন:তরুণদের মাদকমুক্ত রাখতে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে হবে– ওসি মামুনুর রশিদ


সালমা খাতুন জানান, বড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় কালো মাসকালাই ডাল ও চাল-কুমড়া। ডাল ও কুমড়ার মিশ্রণে মেশিনে পেস্ট তৈরি করে প্রতিদিন সকালে নেটের ওপর ছোট ছোট করে বড়ি তৈরি করে শুকানো হয় রৌদ্রে। তাদের কারখানায় কাজ করে ৩ জন পুরুষ ও ২৭ জন নারী। বাড়ির কাজের পাশাপাশি ৩-৪ ঘণ্টা বড়ি তৈরি করে নারীরা যা পারিশ্রমিক পায় তা দিয়ে ভালোই চলে তাদের সংসার।
ইসলাম মিয়া জানান, বড়ি তৈরি করে রোদে শুকিয়ে প্যাকেট করে ঢাকা, খুলনা, চিটাগং, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে কুমড়াবড়ি তৈরি হওয়ায় সবাই এখন এই সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নিতে পারছে। শিক্ষিত এই যুবক নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অনেকেরই করেছেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।
উদ্যোক্তা ও কারখানার মালিক, ওয়াহিদ হাসানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসায়ের পাশাপাশি করেছেন কুমড়াবড়ি তৈরির কারখানা।
তিনি জানান, প্রায় ৬ বছর হলো তিনি এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। সারাদেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নেন। সে অনুযায়ী ডেলিভারি করা হয়। স্থানীয় বাজারেও এর চাহিদা ভালো।

তিনি আরও জানান, আগামী ৩ মাস চলবে বড়ি তৈরির কাজ। প্রতিদিন ১০ মন বড়ি তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। যা থেকে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা লাভ হয়। প্রতি কেজি কুমড়া বড়ি বিক্রি হয় ৩০০ টাকা কেজি দরে।

সর্বশেষ খবর