আগামী জুলাই থেকে পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা ৩৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সরকারের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের দাবি, জানুয়ারি মাস থেকে ভাতা ৩৫ হাজার হতে হবে।
আজ রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা (এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত) শাহবাগে আন্দোলন চলছে।
দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানের হেয়ার রোডের বাসায় আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক হয়। সেখানে জুলাই থেকে বেতন ৩৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
ওই বৈঠকে থাকা একজন চিকিৎসক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চিকিৎসকদের জানুয়ারি মাস থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং জুলাই মাস থেকে ৩৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আমরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ডা. মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, ড্যাবের কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. জহিরুল হক শাকিল, এনডিএফের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান, যুগ্ম সম্পাদক ডা. রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির হিমু বৈঠকে ছিলেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষে ছিলেন ডা. জাবির হোসেন, ডা. নুরন্নবী, ডা. ইমরান শিকদার।
তবে বৈঠকে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা সরকারের প্রস্তাব মেনে নেন বলে জানা গেছে। পরে তারা আবার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
বৈঠকে থাকা একজন চিকিৎসক জানান, ‘আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি এ প্রস্তাবে একমত হয়ে বৈঠক ত্যাগ করেন। এখন আবার আন্দোলনের ঘোষণা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার পাঁয়তারা ছাড়া কিছু না।’
ওই চিকিৎসক বলেন, ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি এসব চিকিৎসক সরকারি হাসপাতালে সার্ভিস দেন না। তারা সার্ভিস দেন প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে। দাবি করছেন, নবম গ্রেডের।
সরকারি নবম গ্রেডের বেতন হলো ৩৪ হাজার ৬০০ টাকা। সেখানে তাদের বেতন ৩৫ হাজার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’
এর আগে বেলা ৯টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জড়ো হন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। সেখানে আড়াই ঘণ্টা অবস্থানের পর বেলা সাড়ে ১১টায় তারা শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেন। এতে শাহবাগ এলাকার আশপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
আন্দোলন চলাকালে বিকেল সাড়ে ৫টায় চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী সাংবাদিকদের জানান, ‘ডা. সায়েদুর রহমান স্যারের আমন্ত্রণে আমরা চার জনের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় বসেছিলাম। সেখানে ড্যাব-এনডিএফের পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক কমিটির কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সায়েদুর রহমান স্যার আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে তিনি আগামী জুলাই মাস থেকে ৩৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আমরা সেখান থেকে আলোচনা শেষ করে ফিরে এসেছি।’
ডা. নুরুন্নবী বলেন, ‘আমরা স্যারের কাছে একটা পার্মানেন্ট সলিউশন চেয়েছি, আমাদের যেন বারবার রাস্তায় নামতে না হয়। স্যার বললেন তোমাদের ৩৫ হাজারই দেব, সেটা জুলাই থেকে। তোমাদের দাবি আমরা মেনে নিচ্ছি কিন্তু আমাদেরকে সময় দিতে হবে। তবে এখানে আসার পর আমরা বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানুয়ারি মাস থেকেই ৩৫ হাজার টাকা ভাতা দাবি করছি।’