ভারত থেকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
বাণিজ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান এবং আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে আজ রবিবার রেজিস্ট্রি ডাকে নোটিশটি পাঠানো হয়।
নোটিশ হাতে পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ভারত থেকে অপ্রয়োজনীয় সব পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ডামি আমদানিকারক বা অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির আড়ালে যারা হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে অর্থ পাচার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করা হয়েছে।
তা না হলে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করবেন করা হবে বলে নোটশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিশ্বের সব দেশ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘তুলনামূলক সুবিধা’ নীতি অনুসরণ করে থাকে। ‘তুলনামূলক সুবিধা’ বলতে এমন একটি নীতিকে বোঝায়, যেখানে একটি দেশ সেই সব পণ্য বা সেবা আমদানি করে, যেসব পণ্য বা সেবা দেশীয়ভাবে উৎপাদন সম্ভব হলেও উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। ফলে দেশটি কম খরচে উচ্চ মানসম্পন্ন পণ্য বা সেবা আমদানি করে থোকে।
উদাহরণ টেনে নোটিশে বলা হয়েছে, ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। এই পোশাক নিজে দেশে উৎপাদন বা প্রস্তুত করতে গেলে তাদের কয়েক গুণ বেশি খরচ পড়ে। তাই ‘তুলনামূলক সুবিধা’ নীতি অনুসরণ করে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক নিয়ে থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ভারত থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এই নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে না।
কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির পাশাপাশি ব্যাপক পরিমাণ অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হচ্ছে।
নোটিশদাতার ভাষ্য, বাংলাদেশে যরা ভারতীয় পণ্য আমদানি করছেন, তাদের অধিকাংশই প্রকৃত আমদানিকারক নন। তারা মূলত ভারতীয় রপ্তানিকারকদের দালাল বা ডামি আমদানিকারক। এই দালাল আমদানিকারকরা বিভিন্ন যোগসাজশে ভারত থেকে কম দামে পণ্য আমদানি করে দেশের বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেন। পরে মুনাফার একটি অংশ কমিশন হিসেবে রেখে বাকি টাকা তারা হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাচার করেন।
এর ফলে হুমকির মুখে পড়ছে স্থানীয় শিল্প-কারখানা। ক্ষতির মুখে পড়ছে আমদানি-রপ্তানি শিল্প, প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তা, শুল্ক হারাচ্ছে সরকার। আর পাচার হচ্ছে দেশের টাকা।
ওই আইনজীবী বলেছেন, তাই নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ভারত থেকে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ এবং অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির আড়ালে যারা হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হলো। না হয় এ বিষয়ে ব্যাবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হবে।
অপ্রয়োজনীয় কোন কোন পণ্য ভারত থেকে আমদানি করা হয় বা হচ্ছে, জানতে চাইলে নোটিশদাতা মো. মাহমুদুল হাসান তা বলতে পারেননি। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে ঢালাওভাবে সব ধরনের পণ্যই আমদানি করা হয়।’