কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে পরিবেশ সুরক্ষা ও জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কাঠ খড়ির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে গোবরের লাকড়ি। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উদ্ভাবনী এই পদ্ধতি ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে এবং পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে।
গোবরের লাকড়ি তৈরি একটি সহজ প্রক্রিয়া। গরুর গোবর জমিয়ে গোলাকৃতির বা কাঠির মতো আকৃতিতে তৈরি করে রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এগুলো পরবর্তী সময়ে রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। কাঠ খড়ির তুলনায় এটি বেশ কার্যকর ও সাশ্রয়ী। বিশেষত, যেসব এলাকায় জ্বালানির জন্য কাঠের প্রাপ্যতা কম, সেসব অঞ্চলে এই পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয়।
স্থানীয় কৃষক মিজানুর রহমান জানান, “আগে আমরা কাঠ খড়ির ওপর নির্ভর করতাম। কিন্তু এখন গোবরের লাকড়ি ব্যবহার করি। এটি সস্তা, পরিবেশবান্ধব এবং সহজলভ্য।”
গোবরের লাকড়ি ব্যবহারে একদিকে যেমন কাঠ কাটার প্রবণতা কমেছে, অন্যদিকে ফসলি জমিতে প্রয়োজনীয় জৈবসার হিসেবে পোড়া ছাই জমিতে ব্যবহার করা যাচ্ছে। এ পদ্ধতি কৃষির উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুন:সরকারকে অচল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত প্রশাসন ক্যাডার
ফুলবাড়ি উপজেলার সাংবাদিক জাকারিয়া শেখ জানান, “গোবরের লাকড়ি ব্যবহারে স্থানীয়দের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আমরা এই উদ্যোগকে আরও উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন এন জি ও র সাথে আলোচনা করছি যাতে তারা এই উদ্যোগ কে বানিজ্যিক ভাবে করার জন্য ঋণ প্রকল্প চালু করে।
তিনি আরো জানান এই পদ্ধতির সফল বাস্তবায়নের জন্য সঠিক প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রয়োজন। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও এ কাজে এগিয়ে আসতে পারে।এটিকে বানিজ্যিক ভাবে এগিয়ে নিতে পারলে গণহারে গাছ কাটার প্রবণতা কমবে,যাতে পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ফুলবাড়িতে গোবরের লাকড়ি ব্যবহারের এই উদ্ভাবনী উদ্যোগ আমাদের গ্রামীণ জীবনে পরিবেশবান্ধব বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি আরও বিস্তৃত হলে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।