কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে এলাকাছাড়া করার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ২২ জনকে আসামি করে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন আব্দুল হাই কানু।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তারু উজ জামান। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু নিজে উপস্থিত হয়ে মামলা করেছেন। ওসি এ-ও বলেন, ‘আমরা মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি।’
মামলার এজাহারে আব্দুল হাই কানু বলেছেন, গত ২২ ডিসেম্বর নিজ গ্রাম বাতিসার লুদিয়ারায় গেলে জামায়াত সমর্থক আবুল হাশেমের নেতৃত্বে অন্য অভিযুক্তরা তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে যান। সেখানে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা কানুকে মারধর করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে এলাকাছাড়া করেন।
এ সময় ঘটনাটি মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন অভিযুক্তরা। এতে তার সামাজিকভাবে ১০০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে। মামলায় জামায়াতের বহিষ্কৃত সমর্থক আবুল হাশেমকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত আরেক সমর্থক অহিদুর রহমানকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
গত রবিবার দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করেন স্থানীয় কয়েকজন। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওই এলাকার জামায়াতের সমর্থক প্রবাসী আবুল হাশেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একদল লোক এ ঘটনা ঘটান। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু উপজেলার লুদিয়ারা এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের রোষানলে পড়ে দীর্ঘ ৮ বছর এলাকাছাড়া ছিলেন তিনি।