প্রশান্ত-আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী পানামা খাল দিয়ে পারাপারের সময় যুক্তরাষ্ট্রর জাহাজগুলো থেকে ‘অন্যায্য’ ফি আদায়ের নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খালের দখল ওয়াশিংটনের কাছে ফিরিয়ে আনার হুমকি দিয়েছেন তিনি। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) পানামা খাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক জাহাজগুলো থেকে অন্যায়ভাবে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ আনেন ট্রাম্প।
এএফপি’র খবরে বলা হয়, বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথ পানামা খাল ব্যবহারের জন্য মধ্য-আমেরিকার দেশ পানামা অতিরিক্ত ফি আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত-প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন এই নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পানামা যদি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে খালটি পরিচালনা না করে, তাহলে এর নিয়ন্ত্রণভার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের জন্য পানামার কাছে দাবি জানাবেন তিনি।
ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে পানামা খাল ঘিরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। পানামা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভুল হাতে এই খালটি পড়তে দেবেন না। পানামা খালে পণ্যবাহী জাহাজ পরিচালনায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই খালের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পানামার; চীন বা অন্য কারও নয়। আমরা কখনই এর নিয়ন্ত্রণ ভুল কারও হাতে যেতে দেব না।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন কূটনীতিতে প্রত্যাশিত পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে ট্রাম্পের এই হুমকিতে; যিনি ঐতিহাসিকভাবে মিত্রদের হুমকি ও প্রতিপক্ষের সঙ্গে কাজ করার সময় মারমুখী অবস্থান নিয়ে থাকেন।
আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে সংযোগকারী পানামা খাল বিশ্ব বাণিজ্যে মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র পানামা খালের নির্মাণকাজ শেষ করে।
১৯৭৭ সালে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের শাসনামলে এই খালের নিয়ন্ত্রণভার পানামার হাতে তুলে দেওয়া হয়। ১৯৯৯ সালে খালের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে মধ্য আমেরিকার দেশটি। এই খালের মাধ্যমে এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন হয়। যার ফলে এই দুই মহাদেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে যাওয়ার দীর্ঘ পথ এড়াতে সক্ষম হয় জাহাজগুলো। বৈশ্বিক নৌপরিবহনের প্রায় পাঁচ শতাংশই হয়ে থাকে পানামা খাল দিয়ে।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এই খালের প্রধান ব্যবহারকারী।