আজ রোববার (২২ ডিসেম্বর) পৃথক তিন আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক যশোর সদর ও অভয়নগরের ১২৫ জনের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তাদের মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ২০, অভয়নগর উপজেলার ১০৫ ও কেশবপুরের ৪২ জন রয়েছেন।
তবে কেশবপুর উপজেলার ৪২ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রে বোমাবাজির ঘটনায় গত ১৯ নভেম্বর কোতোয়াালি থানায় মামলা করেন অ্যাডভোকেট মুন্সী মঞ্জুরুল ইসলাম। এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনসহ ৯৬ জন। রোববার চেয়ারম্যানসহ ২০ জন এজাহারভুক্ত আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া অভয়নগরের পৃথক দুটি মামলায় একইদিন ১০৫ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন—অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আনিছুর রহমান মিন্টু, সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাবের ছেলে শেখ কাফি সম্রাট, কমিশনার বিপুল শেখ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল, ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মামুনসহ নেতৃবৃন্দ।
তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া একইদিন কেশবপুরের আরেকটি নাশকতার মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুর রহমান তাদের জামিন মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলা ও অভয়নগর উপজেলার আত্মসমর্পণকারী আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ কবীর হোসেন জনি বলেন, ‘মামলার ঘটনার সঙ্গে বাস্তবে কোনো মিল নেই। মনগড়া অভিযোগ দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন বলেন, আদালতের নির্দেশে আত্মসমর্পণকারী আসামিদের যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আদালত খাসকামরা থেকে কারাগারের উদ্দেশে প্রিজনভ্যানে উঠানোর আগে আদালত চত্বরে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল করে তোলেন নেতাকর্মীরা। ‘জয় বাংলা’, ‘শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘জাতির পিতা শেখ মুজিব, লও লও লও সালাম’ বলে স্লোগান দেন তারা। এ সময় আদালত চত্বরে একধরণের উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলাতে আদালত চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন লক্ষ্য করা গেছে।
৫ আগস্ট পরবর্তী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এভাবে ফিরে আসায় জেলাজুড়ে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও পাবলিক প্রসিকিউটর সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘আদালত চত্বরে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হওয়া ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।’