আবদুল্লাহ ইবনুল সাববাহ আল-হাশিমী আল-আত্তার (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ জুমাবারের যে মুহূর্তটিতে দু’আ কবূলের আশা করা যায়, তোমার সে মুহূর্তটিকে বাদ আসর সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টিতে তালাশ কর। – মিশকাত ১৩৬০, তা’লীকুর রাগীব ১/২৫১, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯ [আল মাদানী প্রকাশনী]
ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ এই সনদে হাদীসটি গারীব। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এই হাদীসটি অন্য সূত্রেও বর্ণিত আছে। রাবী মুহাম্মাদ ইবনু আবী হুমায়দ হচ্ছেন যঈফ। তার স্মরণশক্তির বিষয়ে হাদীস বিশেষজ্ঞ কতক আলিম তাকে যঈফ বলে মত দিয়েছেন। তাকে হাম্মাদ ইবনু আবী হুমায়দও বলা হয়। কথিত আছে, তিনি হলেন আবূ ইবরাহীম আল-আনসারী। ইনি হাদীসের ক্ষেত্রে মুনকার। সাহাবী এবং পরবর্তী যুগের কতিপয় আলিমের অভিমত হ’ল, এই দু’আ করার মুহূর্তটি বাদ আসর থেকে সূর্যন্ত সময় আশা করা যায়। ইমাম আহমদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর অভিমত এ-ই। ইমাম আহমদ (রহঃ) বলেনঃ দু’আ করার মুহূর্তটি সম্পর্কে অধিকাংশ হাদীসই বাদ আসর থেকে সূর্যস্ত পর্যন্ত সময়ের কথা উল্লেখিত হয়েছে। তবে যাওয়াল বা সূর্য পশ্চিমদিকে হেলে পড়ার পর থেকেও তা আশা করা যায়।
যিয়াদ ইবনু আয়্যূব আল-বাগদাদী (রহঃ) আমর ইবনু আওফ আল-মুযানী থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ জুমুআর দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে। কোন বান্দা যদি সেই মুহূর্তে আল্লাহর কাছে কিছু দু’আ করে, তবে অবশ্যই তিনি তার দু’আ বাস্তবায়িত করেন। সাহাবীগণ আরয করলেন : হে আল্লাহর রাসূল! কোনটি এই মুহূর্ত? তিনি বললেনঃ জুমুআর ইকামতে সালাত (নামায/নামাজ) থেকে নিয়ে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত। – ইবনু মাজাহ ১৩৮৪, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৯০ [আল মাদানী প্রকাশনী]
এই বিষয়ে আবূ মূসা, আবূ যর, সালমান, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম, আবূ লুবাবা, সা’দ ইবনু উবাদা ও আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ আমর ইবনু আওফ বর্ণিত হাদীসটি হাসান-গারীব।
ইসহাক ইবনু মূসা আল-আনসারী (রহঃ) আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ সূর্য উদিত হয় এমন সব দিনের মধ্যে শেষ্ঠ দিন হ’ল ইয়াওমূল জুমুআহ। এই দিনেই আদম (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সৃষ্ঠি করা হয়। এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে দাখিল করা হয়, এই দিনেই তাঁকে পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়া হয়। এই দিনের মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত বিদ্যামান কোন মুসলিম বান্দা যখন সালাতরত অবস্থায় এই মুহূর্তটি পায়, আর সে আল্লাহর কাছে কিছু যাঞ্ছা করে, তখন অবশ্যই আল্লাহ তার এই যাঞ্ছা পূরণ করেন। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ আবদুল্লাহ ইবনু সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু -এর সাথে আমার মুলাকাত হলে তাঁকে আমি এই হাদীসটি বর্ণনা করি। তখন তিনি বললেনঃ আমি এই মুহূর্তটি সম্পর্কে সমধিক অবহিত। আমি বললাম, আমাকে এই সম্পর্কে অবহিত করুন। এই বিষয়ে আমার সঙ্গে কার্পন্য করবেন না। তিনি বললেনঃ বাদ আসর কেমন করে হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলেছেন, সালাত (নামায/নামাজ) রত অবস্থায় যদি কোন মুসলিম বান্দা এই মুহূর্তটি পায়। অথচ বাদ আসর তো (নফল) সালাত হয় না। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এই কথা বলেননি যে, সালাতের অপেক্ষায় যে ব্যক্তি বসা থাকবে, তাকে সালাত রত বলে গণ্য করা হবে? বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এ-ও তা-ই। – ইবনু মাজাহ ১১৩৯, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৯১ [আল মাদানী প্রকাশনী]
হাদীসটিতে লম্বা কাহিনী রয়েছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান-সহীহ। ولا تضنن بها على অর্থ হ’ল আমার সাথে এই বিষয়ে কার্পন্য করবেন না। الظن অর্থ-কৃপণ। الظَّنِينُ অর্থ- সন্দেহযুক্ত-সন্দেহ প্রবণ।