উপমহাদেশের ইতিহাসে ভারত কখনো কোনো যুদ্ধে জয়লাভ করেনি, অথচ তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়কে নিজেদের অর্জন হিসেবে দাবি করছে। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা(বাসস) চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ।
১৮ ডিসেম্বর বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন।
মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলেন, “ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যদি বলেন, ৭১-এ বাংলাদেশের বিজয় ভারতের বিজয় ছিল, তাহলে আমাদের হাসি পায়। এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য শুধু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেই বিকৃত করে না, এটি আমাদের গর্বের বিজয়কে অসম্মানিত করে। আমরা এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কামরুল হুদা। সঞ্চালনায় ছিলেন সেক্রেটারি এবিএম ইমরান। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতা ওয়াহিদুজ্জামান মিন্টু, মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, দৈনিক আজকের বাংলা চট্টগ্রাম’র বিভাগীয় ব্যুরো চীফ মোঃ ইসমাইল ইমন, পরিবহন শ্রমিক দল নেতা ফরহাদ উদ্দিন সোহাগ, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি নাছিম চৌধুরী।
বক্তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যকে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি অসম্মানজনক বলে অভিহিত করেন। বাকলিয়া থানা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন লেদু ,সড়ক পরিবহন শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক ফরহাদ উদ্দীন সোহাগ, কোতোয়ালি থানা আহ্বায়ক আখতার হোসেন, যুবদল নেতা জাবেদুল হক, আইয়ুব মিয়াজী এবং সাংবাদিক সরোয়ার কামালসহ অন্য বক্তারা বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের জনগণের আত্মত্যাগ ও সাহসের ফসল। এর কৃতিত্ব অন্য কেউ দাবি করতে পারে না।”
এ সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তারা বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করার কোনো প্রচেষ্টা আমরা বরদাশত করব না। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস সংরক্ষণ করা আবশ্যক।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্টে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়কে ভারতের অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেন। এই মন্তব্য নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এমন দাবি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, “ভারতের এমন দাবিগুলো কূটনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা দরকার। আমাদের কূটনৈতিক মিশনকে এ বিষয়ে শক্তিশালী ভূমিকা নিতে হবে।”
সমাবেশ শেষে বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সুরক্ষায় জনগণকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, “এই ইতিহাস আমাদের জাতীয় পরিচয়, যা কোনোভাবেই বিকৃত হতে দেওয়া যাবে না।”