ঢাকা গামী বুড়িমারী ও লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন দুইটি সরাসরি বুড়িমারী থেকে চালুর দাবিতে রেলপথ ও সড়ক পথ অবরোধ করেছে হাতীবান্ধা উপজেলার সচেতন জনগন। এতে ৩টি ট্রেনসহ শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে জেলার হাতীবান্ধা রেলস্টেশনে রেলপথ ও বন্দরে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করেন এলাকার সচেতন জনগন।
জানা গেছে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বুড়িমারী-ঢাকা রেলরুটে চলতি বছরের ১২ মার্চ বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে আন্তঃনগর ট্রেন ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’। উদ্বোধনী দিনের পর থেকেই বুড়িমারীতে আর আসেনি বহুল কাংখিত এ ট্রেনটি।উদ্বোধনের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে ঢাকা রুটের ওই ট্রেনটি আর চলাচল করতে দেখা যায়নি । উদ্বোধনের পর থেকেই লালমনিরহাট রেলস্টেশন থেকে ঢাকার রুটে চলাচল করে আসছে ট্রেনটি। পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী রেল স্টেশন থেকে ঢাকা রুটের ট্রেনটি চলাচলের জন্য অত্র এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি। সেই দাবি পুরনে জন্য আন্তঃনগর ট্রেন বুড়িমারী এক্সপ্রেস নাম পেলেও বুড়িমারী ষ্টেশন থেকে যাতায়ত করছে না।
এ ছাড়াও বিগত আওয়ামী সরকার আমলে লালমনিরহাট জেলা শহর থেকে ঢাকা গামি আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস চালু হয়। সেটিও জেলা শহর থেকে ঢাকা অভিমুখে ছেড়ে যায় । ফলে ট্রেন দু’টি লালমনিরহাট জেলাবাসীর জন্য হলেও সদর উপজেলা ব্যাতিত বাকী ৪ উপজেলা এবং বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী ও ইমিগ্রেশনের যাত্রীরা সুবিধা বঞ্চিত রয়েছেন। এসব যাত্রীকে এ দুই ট্রেনে যাতায়ত করতে প্রায় একশত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়।
দাবি পুরনের জন্য অবরোধ , স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধনসহ নানান কর্মসুচি পালন করেছে স্থানীয় জনগন। প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষের শুধুই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। কার্যত কোন সুফল পায়নি চার উপজেলার মানুষ। তাই তাদের দাবি আদায়ে জন্য মঙ্গলবার দুপুরে লালমনিরহাট বুড়িমারী রেলরুটের হাতীবান্ধা ষ্টেশনে রেলপথ অবরোধ করেন এলাকাবাসী । এতে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা কমিউটার ট্রেনটি হাতীবান্ধা রেলষ্টেশনে, বুড়িমারী গামি আন্তঃনগর করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেন ২টি কালীগঞ্জের কাকিনা ষ্টেশনে ও একই পথে আদিতমারী ষ্টেশনে অপর একটি কমিউটার ট্রেন আটকা পড়ে।
একই দাবিতে বিকেলে হাতীবান্ধা উপজেলার বন্দর এলাকায় লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা। ফলে উভয় পাশে প্রায় দেড় কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মহাসড়কে শুয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। ফলশ্রুতি ঢাকার সাথে সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আদিতমারি কালিগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার।
হাতীবান্ধা সচেতন জনগনের এর পক্ষে ফিরজ হোসেন বলেন, বুড়িমারী নামে নামকরণ হলেও বুড়িমারি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায় না। বুড়িমারী ও হাতীবান্ধা মানুষের দাবি খুব দ্রুত ট্রেন দুইটি বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে সরাসরি ঢাকা রুটের চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
হাতীবান্ধা পাটগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য প্রায়ত জয়নাল আবেদিন সরকারের ছেলে শাহিদুজ্জামান কোয়েল, কমরেড শওকত হোসেন, সচেতন জনগণের পক্ষে ফিরজ হোসেন, নিশাত ফারুক, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান সাজু,, শামসুল আলম খান বুলেট, বৈশম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সহ অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার আব্দুস সালাম বলেন, রেল ও সড়ক পথ অবরোধকারীদের সাথে আমরাও একমত। তবে রেক সল্পতা ও ট্রেনের যাত্রা শুরু শেষ ষ্টেশনে কিছু অনুষঙ্গতা প্রয়োজন। যা বাজেট সল্পতার কারনে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাদের দাবির বিষয়টি ঊর্দ্ধতন মহলকে অবগত করা হয়েছে। তবে অবরোধকারীরা আর কিছু দিন সময় দিলে তাদের দাবি পুরন করা সম্ভব হবে।