উত্তরের জেলা দিনাজপুরের বীরগঞ্জে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দুই সপ্তাহে উপজেলায় ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে জ্বর, সর্দি ও কাশি। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে অনেক লোক ভিড় করেছে। তাদের অনেকেই ঠান্ডাজনিত সর্দি, জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত। বয়স্কদের অনেকেই শ্বাসকষ্ট, শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এসেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ইসমাইল হোসেন জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে শিশু ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর ) হাসপাতালে ২০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে ১৭ জন শিশু। গত দুইদিন থেকে আজ সকাল ১২টা পর্যন্ত ৯ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের কলা ও চিড়া খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শীতে শিশুদের প্রতি বিশেষ যতœবান হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, শীতে শিশুদের প্রতি বিশেষ যতœবান হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাতে শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। শিশুদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে পারে, তাই তাদের সুস্থ রাখতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। শীত বেশি পড়লে শিশুকে গরম কাপড় পরাতে হবে। শিশুদের খুব বেশি সময় ঘরের বাইরে রাখা যাবে না।
উপজেলার সাতোর ইউনিয়নের খাটিয়াদিঘী গ্রাম থেকে আসা বেল্লাহ হোসেন বলেন, আড়াই বছরের সন্তান রিয়াদ পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সন্তানের এই পরিস্থিতিতে আমি যথাসম্ভব চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন, তবে আশা করি দ্রুত তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।
ভোগনগর ইউনিয়নের কালাপুকুর গ্রামের আব্দুল হাকিম (৬৭) জানান, শীতে শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমার সমস্যা বেড়েছে। তাই হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা নিতে এসেছি।
সুজালপুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রাম থেকে সাগর রায় বলেন, গত চার-পাঁচদিন ধরে ছেলের বমি আর পাতলা পায়খানা হচ্ছে। গ্রাম্যচিকিৎসক দেখানোর পরও সারেনি। তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মহসীন বলেন, শীতজনিত রোগের প্রকোপ অনেকটাই বেড়েছে। অন্যান্য রোগীর তুলনায় শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। স্যালাইন যাতে নষ্ট না হয় তাই সরবরাহের ক্ষেত্রে একটু কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। শিশুদের প্রথমে ১০০ ও পরে ২০০ এমএল স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে।