পরিচয়ঃ
সুভাষ দত্ত বগুড়া জেলার চকরতী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।জন্ম ১৯৩০ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি।তার নানা বাড়ি দিনাজপুর জেলার মুন্সি পাড়ায়।তিনি বাস করতেন পুরান ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে তার নিজের বাড়িতে।
স্ত্রীঃ সীমা দত্ত। সীমা দত্ত ২০০১ সালে পরলোক গমন করেন। দুই ভাই তিন বোন।তন্মধ্যে সবার বড় সুভাষ দত্ত। দুই ছেলে দুই মেয়ে।বড় ছেলে শিবাজী দত্ত।ছোট ছেলে রানাজি দত্ত। রানাজি দত্ত বর্তমানে সুইডেন প্রবাসী।বড় মেয়ে শিল্পী দত্ত।স্বামী গৃহ বরিশাল।ছোট মেয়ে শতাব্দী দত্ত।স্বামীগৃহ রংপুর।
চাকুরীঃ
সুভাষ দত্ত পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে ভারতের বোম্বেতে গিয়ে একটি ছায়াছবির পাবলিসিটি স্টুডিও তে মাত্র ৩০ টাকার মাসিক বেতনে কাজ শুরু করেন।
ঢাকায় প্রত্যাবর্তনঃ
তিনি ১৯৫৩ সালে ঢাকার প্রচার সংস্থা এভারগ্রিনে পুনরায় চাকুরীতে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন সিনেমার পোস্টার আঁকার কাজের মাধ্যমে।১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত দেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মুখোমুখোসের পোস্টার ডিজাইনারের গঠিত অধিকারী পরিচালক সুভাষ দত্ত।
প্রথম অভিনয়:
জনপ্রিয় পরিচালক এহতেসামের এদেশ তোমার আমার চলচ্চিত্রে একজন খল অভিনেতা হিসাবে নায়েবের চরিত্রে অভিনয় করেন সুভাষ দত্ত।ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি।অতপর অভিনয় করেন হারানো দিন চলচ্চিত্রে।মুক্তি পায় ১৯৬১ সালের ৪ আগস্ট।
অন্যান্য ছবিতে অভিনয়ঃ
এছাড়াও ফুলশয্যা,পালা বদল,কাগজের নৌকা, হারানো দিন, বসুন্ধরা, বাল্যশিক্ষা সহ তিনি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।তার কৌতুক অভিনয়ও দর্শকের কাছে জনপ্রিয়তা পায়।
প্রথম পরিচালকঃ
তারপর চালিত প্রথম ছবি সুতরাং ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায়।এই চলচ্চিত্রে প্রধান নায়ক তিনি। তার বিপরীতে তারই আবিষ্কার নবাগত নায়িকা কবরী।
আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভঃ
আন্তর্জাতিক সম্মাননা লাভ সুভাষ দত্তের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।তারপরিচালিত সিনেমা সুতরাং বাংলাদেশে প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্মাননা লাভ করে।
তার পরিচালিত বিখ্যাত চলচ্চিত্রঃ
সুতরাং ১৯৬৪ আবির্ভাব ১৯৬৮ আলিঙ্গন ১৯৬৯ বিনিময় ১৯৭০ অগ্নি সাক্ষী ১৯৭২ বসুন্ধরা ১৯৭৩ কাগজের নৌকা,বদলা, আয়না ও অবশিষ্ট, আকাঙ্ক্ষা, ডুমরে ফুল, সকাল সন্ধ্যা, ফুলশয্যা, আবদার, নাজমা, সবুজ সাথী, স্বামী স্ত্রী ও আমার ছেলে,২০০৮সালে মুক্তি পায়।
পুরুষ্কারঃ
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ১৯৭৭সাল। একুশে পদক ১৯৯৯ সাল।শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক পুরস্কার ১৯৯৯সাল।সহ দেশি-বিদেশি অনেক পুরস্কার লাভ করেন।
মৃত্যুঃ
তিনি ১৯৬৫সাল থেকে২০১২সাল পর্যন্ত দীর্ঘ কর্মজীবন অতিবাহিত করেন।১৬ই নভেম্বর ২০১২সালে রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকায় নিজবাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। সমাধি পোস্তগোলা শ্মশান ঘাটে এই মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলা চলচ্চিত্রের বিখ্যাত কারিগর কে সমাধিস্ত করা হয়।ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ডঅব অনার দেওয়া হয়।
মোঃ আব্দুর রাজজাক রাজু সহকারী অধ্যাপক বাংলা।
গ্রন্থঃ বরেন্দ্রভূমির বরেণ্যরা।