বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন বলেছেন, বিগত ১৭ বছরে দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকেরা। কৃষকের মুখে হাসি ছিল না। গত ১৭ বছরে আটবার সারের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছিল। বিশেষ করে ইউরিয়া সারের চারগুণ মূল্য বৃদ্ধি এবং বিগত সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে কৃষি পেশা এখন অলাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।
তিনি শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কৃষক দলের আনন্দ র্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
র্যালীটি নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে লাভ লেইন, জুবলী রোড়, তিন পুলের মাথা হয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর কৃষকদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলমগীরে সভাপতিত্বে ও বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন কৃষক দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসান পলাশ।
কৃষিবিদ তুহিন বলেন, জনগণের ভোটে বিএনপি যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন কৃষকের মুখে হাসি থাকবে। আমরা কৃষকের মুখে হাসি ফুটাবো। কৃষিকে আধুনিক কৃষিতে পরিণত করব। আমরা কৃষকদের নিয়ে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আধুনিক কৃষি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শপথ হবে দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে, সাধারণ মানুষ ও কৃষকের পক্ষে থাকবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা চলে গেলেও বিপদ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আবারও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে। নতুন করে বিপদ আসার আশঙ্কা আছে। বিএনপির বিরুদ্ধে সবসময় ষড়যন্ত্র হয়। গণতন্ত্রবিরোধীরা আবারও মাথা চাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা যেন সফল হতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা সবাই মিলে একটি অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি করেছি। আমরা আশা করবো, তারা অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দেবেন। নির্বাচিত সরকারই শ্রেষ্ঠ সরকার। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের দরজা, সে দরজা পার হয়েই গণতন্ত্রের পথে যেতে হবে।
এরশাদ উল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছর গোটা জাতিকে নির্যাতন করেছে। গণতন্ত্রের মতো দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিও ধ্বংস করেছে। ব্যাংক ধ্বংস করেছে। সব জায়গায় দুর্নীতি করেছে। তারা আবারও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সামনে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হতে হবে।
নাজিমুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। কারণ এই সরকার ফেল করলে, অভ্যুত্থান ফেল করে যাবে, বিপ্লব ফেল করে যাবে, আমরা আবারও সেই অন্ধকারে চলে যাব। এ বিষয়গুলো নিয়ে সবার পজেটিভ চিন্তা করা প্রয়োজন।
এতে বক্তব্য রাখেন কৃষকদলের বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রশিদ দৌলতি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মহসিন চৌধুরী রানা, উত্তর জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক বদিউল আলম বদরুল, মহানগর কৃষকদলের সদস্য সচিব সাবের আহমেদ টারজেন, দক্ষিণ জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব মীর জাকির হোসেন, উত্তর জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব নাজিম উদ্দিন শাহিন প্রমূখ।