পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পার করলেও শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট এখনো কাটেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সিট সংকট এবং আর্থিক সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী হলে উঠতে পারছেন না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, নতুন দুটি হল চালু হলে সংকট অনেকাংশে দূর হবে।
একাডেমিক ও স্কলারশিপ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পাবিপ্রবিতে বর্তমানে ২১টি বিভাগে মোট ৬,৪০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে আসন সংখ্যা মাত্র ৭৬২টি। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৫০২টি এবং শেখ হাসিনা হলে ২৬০টি সিট রয়েছে।
অর্থাৎ, শতকরা মাত্র ১২ ভাগ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন। ছেলে শিক্ষার্থীরা আবাসিক সুবিধার হার ১৪ শতাংশ ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধার হার মাত্র ৯ শতাংশ। বাকি শিক্ষার্থীরা পাবনা শহরের বিভিন্ন মেস ও ভাড়াবাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, “ক্যাম্পাসে আসার পর থেকেই প্রকল্পের কাজ চলমান। ফাইনাল ইয়ারেও মেসে থাকতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে খরচ চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আশা করছি, নতুন হলগুলো দ্রুত চালু হবে।”
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুস সালাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন হল চালু হওয়া খুবই জরুরি। এটি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পরিবেশের উন্নয়ন, আবাসন সংকট নিরসন এবং ক্যাম্পাসের সামগ্রিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর থেকে জানা যায় , ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) ৪৮০ কোটি ৬০ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদিত হয়। এর অধীনে ততৎকালীন প্রস্তাবিত নাম শেখ রাসেল হল (ছেলেদের) এবং শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিব হল (মেয়েদের) নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রতিটি হলে ১,০০০ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা থাকবে।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ৫৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকার ডিডিপি বরাদ্দে হল দুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় ছিল ২০২১ সালের জুলাই। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে পাঁচ দফায় কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। বর্তমান সময়সীমা ২০২৪ সালের জুন মাসে শেষ হয়। জুন পেরিয়ে ডিসেম্বর হলে ও সবগুলো কাজ শেষ হয় নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদ আহমেদ জানান, “শেখ রাসেল হল, একাডেমিক ভবন-২ এবং কনভেনশন হলের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কাজ হস্তান্তরের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিব হলের কাজ শেষ হতে আরও এক মাস সময় লাগবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, ” প্রকল্প হস্তান্তর প্রসঙ্গে চিঠি পেয়েছি,তা উপাচার্য নিকট পাঠিয়েছি। আশা করছি, নতুন হলগুলো চালু হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর হবে।”