Homeরাজনীতিলংমার্চে ভারতে সুবুদ্ধি উদয় হবে আশাবাদ; এসএম জিলানী

লংমার্চে ভারতে সুবুদ্ধি উদয় হবে আশাবাদ; এসএম জিলানী

মোঃ খোকন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি।।

ভারতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী বলেছেন, ভারত চট্টগ্রামকে তাদের বলে দাবি করে, আমরাও তো সিরাজউদ্দৌলার পশ্চিমবঙ্গকে দাবি করতে পারি। সেটাও বাংলাদেশের অংশ। আজকে লং মার্চের মাধ্যমে যদি আপনাদের সুবুদ্ধির উদয় না হয়, তাহলে আমরাও দেশের পাহারায় থাকব। তাই বলছি বাংলাদেশের প্রতি রক্তচক্ষু দেখিয়ে লাভ নেই। আগস্ট বিপ্লবে বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ সেটি প্রমাণ করেছে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার সীমান্তে আয়োজিত সমাবেশে নেতারা ভারতকে এই হুশিয়ারী দেন। আখাউড়া স্থলবন্দরের ট্রাক স্ট্যান্ডে সমাবেশ করে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়ে সন্ধ্যায় শেষ হয়। আগরতলা সীমান্ত থেকে ১০০ মিটার দূরে স্থলবন্দর মাঠে এই সমাপনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না বলেন, বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত স্বাধীন চেতা জাতি। আমরা বাংলাদেশের ভূখণ্ডের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ। ভারতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ভারতের। তারা সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর বাংলাদেশকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে হবে। আমাদের কোনো প্রভু নেই। আমরা ভারতকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে দেখি। আর শেখ হাসিনা সরকারকে ভারত আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। আপনারা ভারতকে বলেন, শেখ হাসিনাসহ তাদের দোসরদের ফিরিয়ে দিতে।

এসএম জিলানী আরও বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য নিজেকে সব সময় গণতান্ত্রিক দাবি করে। তবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নষ্ট করার জন্য ভারত প্রতিবার ষড়যন্ত্র করে আসছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত বারবার হস্তক্ষেপ করেছে। শুধু তাই নয়, ভারত সীমান্তে হাজার হাজার বাংলাদেশের জনগণকে গুলি করে হত্যা করেছে। অনতিবিলম্বে ভারত সীমান্তে এই হত্যা বন্ধ করতে হবে। ভারতকে বাংলাদেশ থেকে ইলিশসহ নানা কিছু উপহার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার বদলে ভারত আমাদের সাথে অসদাচরণ করে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, এই লংমার্চ সফল হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে এই লংমার্চ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতকে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছি, শেখ হাসিনা আপনাদের পৃষ্ঠপোষকতায় হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করা হয়েছে। সুতরাং যতই ষড়যন্ত্র করুন না কেন, তা সফল হবে না।

লংমার্চে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না,ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম পল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, সাংগঠনিক কামরুজ্জামান জুয়েল, ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক এড আব্দুল মান্নান ও সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য কবির আহমেদ ভূইয়াসহ জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে অন্যান্য নেতৃবন্দ বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কখনো প্রভুত্ব মেনে নেয়নি, ভারতের প্রভুত্বও মেনে নেওয়া হবে না। দেশ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করতে চাইলে তা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কর্মীরা প্রতিহত করবেন বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন নেতারা।

এদিকে লং মার্চকে ঘিরে সীমান্ত এলাকায় ছিল কড়া নিরাপত্তা। কাস্টমস এলাকা পর্যন্ত লোকজনকে আটকে দেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

উল্লেখ্য, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা, ভারতীয় মিডিয়ায় অপপ্রচার ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ করেছে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন। সকাল ৯টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়ে পল্টন- ফকিরাপুল- ইত্তেফাক মোড় হয়ে ফ্লাইওভার হয়ে সাইনবোর্ড- চিটাগং রোড- কাঁচপুর মোড়- তারাবো- বরফা- ভুলতা, গাউছিয়া-চনপাড়া, মাধবদী- পাঁচদোনা- সাহেপ্রতাব, ভেলানগর- ইটখোলা- মারজাল- বারুইচা হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় ভৈরব পৌঁছায়। সেখানে সংক্ষিপ্ত পথসভা করে বিকেল সাড়ে ৩টায় আখাউড়া গাড়িবহর পৌঁছায়। ভৈরব থেকে লংমার্চ নিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টায় আখাউড়া সীমান্তে পৌঁছান নেতাকর্মীরা।এতে লাখো নেতাকর্মীর ঢল নামে।

সর্বশেষ খবর