শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।।
সাম্প্রদায়িক উসকানি ও গুজবের বিরুদ্ধে বিএনপির সম্প্রীতি ও শান্তি সমাবেশ করেছে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা বিএনপি। মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় শেরপুর পৌর শহরের টাউন বারোয়ারী মাঠে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোঃ সিরাজ।
গোলাম মোঃ সিরাজ বলেন, ‘ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের মাধ্যমে দেশকে নতুন ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু স্বৈরাচারের দোসররা দেশকে বিভিন্নভাবে অস্থির করে তোলার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন স্থানে লুটপাট, মাজার ভাঙ্গা, সংখ্যা লঘুদের উপর আক্রমণ করছে।’
তিন বলেন, ‘এরপরও এগুলো সারাদেশের সাধারণ চিত্র নয়। ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যে বিএনপি সহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে, সে ব্যাপারে অন্তর্বতীকালীন সরকারের পক্ষ থেকেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের গ্রেফতারের পর তাঁর অনুসারীদের সহিংস প্রতিক্রিয়া এবং একজন আইনজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরও বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য সাম্প্রদায়িক সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। অথচ, ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের বানোয়াট খবর পরিবেশন করে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা সে দেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনেও হামলা করেছে। মূলতঃ তারা ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে মুসলিম-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে ভোটের রাজনীতিতে ফায়দা তোলার জন্যে পরিকল্পিতভাবে এসব করছে। এর ফলে আমাদের দেশের অভ্যন্তরেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
তিনি এই অবস্থায় এলাকার সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখার জন্য দল, মত, ধর্ম, সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
শেরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি শেরপুর উপজেলার আমির দবিবুর রহমান, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের বগুড়া জেলার সভাপতি শ্রীকান্ত মাহতো, আদিবাসী ফোরামের বগুড়া জেলার সভাপতি বাসুদেব বাগদি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বরেন্দ্রনাথ সান্যাল, পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিমাই ঘোষ প্রমূখ।
নেতৃবৃন্দ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বাজায় রাখার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এছাড়াও সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।