Homeবাংলাদেশএবনে মিজান, লোকসাহিত্য ধারার সফল চিত্র পরিচালক সিরাজ গঞ্জ।

এবনে মিজান, লোকসাহিত্য ধারার সফল চিত্র পরিচালক সিরাজ গঞ্জ।

অধ্যাপক মোঃ আব্দুর রাজজাক (রাজু)।
পরিচয়ঃ
৭০ ও ৮০ র দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নতুন ধারার দর্শকদের স্বপ্নের পুরুষ ছিলেন চিত্র পরিচালক এবনে মিজান। বিখ্যাত এই চিত্র পরিচালক ১৯৩০ সনের ৭ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার মুগবেলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোঃ মিজানুর রহমান।ছিলেন সেই সময়ের ব্রিটিশ সরকারের জাদরেল পুলিশ অফিসার। মাতাঃ মোসাম্মদ মাহমুদা খাতুন।

ভাই বোনঃ
তারা সাত ভাই বোন তন্মধ্যে তিন ভাই ই লেখক ও প্রাবন্ধীক। বড় ভাই ডঃ মোখলেসুর রহমান।প্রফেসর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।(২)দর্শক নন্দিত চিত্র পরিচালক এবনে মিজান।(৩)বিখ্যাত প্রাবন্ধিক আজিজ মেহের। চার বোন(১)মোসা যোবেদা খাতুন।(২) অধ্যাপিকা মোসলেমা খাতুন।(৩)নন্দিত কথা সাহিত্যিক অধ্যাপিকা মকবুলা মঞ্জুর।(৪)মোসাঃ জায়েদা খাতুন।

লেখাপড়াঃ
এবনে মিজান সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখান্ড থানায় স্থানীয় স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে লেখাপড়া করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম,এ ডিগ্রী অর্জন করেন।


আরও পড়ুন:সোনাহাট স্থলবন্দর কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দু’গ্রুপে দ্বন্দ্বঃ সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠনের দাবী


চলচ্চিত্রে গ্রাফিক্স ব্যবহারঃ
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে জগতে ইতিহাসে ইবনে মিজানের চলচ্চিত্রে প্রথম গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়।তখন চলচ্চিত্রে এই ধারণাটি ছিল কল্পনারও বাহিরে। এদেশে বিশুদ্ধ বিনোদনধর্মী চলচ্চিত্রের এক অবিসংবাদিত নির্মাতা এবনে মিজান।তিনি লাইলি মজনুর মত সফল প্রেম কাহিনী ভাতদের মত সামাজিক কাহিনী। আর রুপবানের মতো লোক ও কাহিনীর সঙ্গে রূপকথা মিশিয়ে সিনেমার রুপালি পর্দায় জীবন্ত করে তুলেছেন তার নিজস্ব সুনিপুণ দক্ষতায়।

চলচ্চিত্র কে সমৃদ্ধ করনঃ
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে বাণিজ্যিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছিল যাদের দক্ষতা ও প্রচেষ্টায় তাদের মধ্যে এমবে মিজান অন্যতম।তিনি বুঝেছিলেন আবহমান গ্রাম বাংলার খেটে খাওয়া সাধারণ দর্শক আসলে কি দেখতে চায়।

চলচ্চিত্র নির্মাণঃ
চিত্র পরিচালক ইবনে মিজান চলচ্চিত্রে তার মত করে এক নিজস্ব ভুবন সৃষ্টি করেছিলেন।তিনি ১৯৬৪ সালে “আউর গম নেহি” নামে উর্দু চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন।কিন্তু নানা প্রতিকূলতার কারণে ছবিটি মুক্তি পায়নি।

প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রঃ
১৯৬৫ সালে পরিচালক বাংলা লোকসাহিত্যের কাহিনী নির্ভর রূপব্ান চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন।এই চলচ্চিত্র টিতে তিনি ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেন।তার তৈরি দ্বিতীয় চলচ্চিত্র “একালের রূপকথা(১৯৬৬)সন।

তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রঃ
রূপবান ১৯৬৫ একালে রূপকথা ১৯৬৫ আবার বনবাসে রূব্বান।১৯৬৬ জংলি মেয়ে ১৯৬৭ রাখাল বন্ধু ১৯৬৮ পাতালপুরীর রাজকন্যা।১৯৬৯ আমির সওদাগর ও ভেলুয়া সুন্দরী ১৯৭০ কমল রানী দীঘি ১৯৭২ ডাকু মনসুর ১৯৭৪ দুই রাজকুমার ১৯৭৫ এক মুঠো ভাত ১৯৭৬ নিশান ১৯৭৭সন।

শাহজাদা ১৯৭৮ নাগ নাগিনী ১৯৭৯ তাজ ও তলোয়ার ১৯৮০ রাজন নর্তকি ১৯৮১ লাইলি মজনু ১৯৮৩ পুনর্মিলন ১৯৮৪ পাতাল বিজয় ১৯৮৫ রঙ্গিন রাখাল বন্ধু ১৯৮৬ বসন্ত মালতি ১৯৮৭ নাগ জ্যোতি ১৯৮৮ জলপরী ১৯৮৯ জরিনা সুন্দরী, শহীদ তিতুমীর, কত যে মিনতি, জিঘাংসা, বাহাদুর,বাগদাদের চোর,জংলি রানী, আলাল দুলাল,

শেষ ছবিঃ
এবনে মিজান পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্রটি নাম সাগরকন্যা।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসঃ
চলচ্চিত্র নির্মাণ ছেড়ে দিয়ে এবনে মিজান যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার করোনয়া অঞ্চলে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে।

মৃত্যুঃ
বাংলাদেশের জন মানুষের নন্দিত এই চিত্র পরিচালক ২০১০ সালের ২৮ মার্চ ক্যালিফোর্নিয়ার করোনোয়াই ৮৬ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

তথ্যসূত্রঃ
জনকন্ঠ ৬ আগস্ট ২০১৫ ভোরের কাগজ ২৯ মার্চ ২০১৭ কালের কন্ঠ ২৯ মার্চ ২০১৭ ইত্তেফাক ২৯ মার্চ ২০১৭ প্রথম আলো ২৯ মার্চ ২০১৭ বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাই ১ জানুয়ারি ২০২০।

সর্বশেষ খবর