Homeজাতীয়লালন কন্যা ফরিদা পারভীন,বরেন্দ্রভূমির বরেণ্য কন্যা নাটোর জেলার কৃতি সন্তান।

লালন কন্যা ফরিদা পারভীন,বরেন্দ্রভূমির বরেণ্য কন্যা নাটোর জেলার কৃতি সন্তান।

লেখকঃ অধ্যাপক মো আব্দুর রাজজাক (রাজু)।
পরিচয়ঃ
বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ডিসেম্বর।গ্রাম কলম পাড়াঃ শাওঁল থানাঃ সিংড়া।জেলা নাটোরঃ বাবা চিকিৎসক দেলোয়ার হোসেন।মা ও রওফা বেগম। ফরিদা পারভী নের স্বামী প্রখ্যাত গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী অধ্যাপক আবু জাফর।তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

স্বামীর পরিচয়ঃ
আবু জাফর ১৯৪৩ সালের ১০ মে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের গড়ের বাড়ি কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আবু জাফর স্যার বর্তমানে কুষ্টিয়া হতে প্রকাশিত সাপ্তাহিক দিগন্ত” পত্রিকার সভাপতি মন্ডলীর প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

আবু জাফর রচিত গানঃ
এই পদ্মা এই মেঘনা এই যমুনা সুরমা নদীর তটে (দেশের গান) তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম (আধুনিক গান) নিন্দার কাঁটা যদি না বিধিল গায়ে (আধুনিক গান) এর মত বিখ্যাত গানগুলি গীতিকার আবু জাফরের অমর সৃষ্টি।

সন্তান সন্ততিঃ
ফরিদা পারভীনের চার সন্তান। এক মেয়ে জেহান ফারিয়া (প্রাণিবিদ্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) বড় ছেলে ইমাম নেমেরি (এম,বি,এ,ব্যাগিও বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিপাইন)।মেজো ছেলে ইমাম নাহিন সুমন(সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।ছোট ছেলে ইমাম নোমানী রাব্বি (এম,এস,সি,কুষ্টিয়া)।

স্কুল জীবনের সূচনাঃ
মাগুরা ও কুষ্টিনে কুষ্টিয়া গভর্মেন্ট গার্লস স্কুল কুষ্টিয়া, মীর মোশাররফ হোসেন বালিকা বিদ্যালয় ও মেহেরপুর গভর্মেন্ট গার্লস স্কুলে লেখাপড়া করেন।১৯৭৪ সালে কুষ্টিয়া গার্লস কলেজ থেকে এস, এস, সি ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগ থেকে (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে)১৯৮৯ সালে বি,এ অনার্স পাস করেন।


আরও পড়ুন:গাইবান্ধার কনটেন্ট ক্রিয়েটর রনজুর সাফল্য নিজের শো-রুম উদ্বোধন


প্রথম সঙ্গীত পরিবেশন।
১৯৬৮ সালে ফরিদা পারভীন রাজশাহী বেতার কেন্দ্রে নজরুল সংগীতের জন্য প্রথম নির্বাচিত হন।এরপর ১৯৭৩ সনে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। মাগুরায় তার গানের হাতে খড়ি দিয়েছিলেন ওস্তাদ কমল চক্রবর্তী।

নজরুল সংগীত শিক্ষাঃ
নজরুল সঙ্গীতের প্রথম গুরু কুষ্টিয়ার ওস্তাদ আব্দুল কাদের ও মেহের পুরের ওস্তাদ মীর মোজাফফর আলী। পরবর্তীতে তিনি ওস্তাদ রবীন্দ্রনাথ রাই, ওস্তাদ মোতালেব হোসেন বিশ্বাস,ওস্তাদ ওসমান গনির কাছে ক্লাসিক্যাল শিখেন।

লালন চর্চাঃ
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর লালন সাঁইজীর গানের সঙ্গে ফরিদা পারভীনের যোগাযোগ কুষ্টিয়াই তাদের পারিবারিক বন্ধু ছিলেন গুরু মোকসেদ আলী শাহ তার মাধ্যমপ। ১৯৭৩ সালে সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন” গান শিক্ষার মাধ্যমে লালন সংগীতের তালিম নেন।

অন্যান গুরুঃ
মোকসেদ আলী সাঁই ব্যতীত খোদাবক্স সাঁই, ব্রজেন দাস, বেহাল সাঁই, ইয়াসিন সাঁহ, ও করিম শাহের কাছে লালন সংগীতের শিক্ষা গ্রহণ করেন।১৯৭৬ সালে প্রথম অচিন পাখির নামে একটি লালন সঙ্গীতের রেকর্ড বাহির হয়।

পুরুষ্কারঃ
১৯৮৭ সালে একুশের পদক ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পদক ২০০৮ সালে এশিয়ান কালচারাল প্রাইজ চ্যানেল আই মিউজিক এওয়ার্ড। সংগীতের শীর্ষ ১০ কেটাগরির সবকটি পুরস্কারই পেয়েছেন সংগীতে মধুর কন্ঠের অধিকারী এই লালন কন্যা।

তার গাওয়া জনপ্রিয় গানঃ
(১) এই পদ্মা এই মেঘনা এই যমুনা সুরমা নদী তটে।
(২) তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম সে এখন।
(৩) নিন্দার কাটা যদি না বিধিল গায়ে প্রেমের কি সাধ।
(৪) কিশোরী বউ যায় চোখের জলে ভেসে ভেসে কি।
(৫) বিধিরে তুই আমায় ছাড়া রঙ্গ করার মানুষ পাইলি।
(৬) জাত গেল জাত গেল বলে একি আজব কারখানা।
(৭) তিন পাগলে হলো দেখা নদী এসে ওতোরা কেউ।
(৮) মিলন হবে কত দিনে আমার মনের মানুষের সনে।
(৯) বাড়ির কাছে আরশী নগর সেথাই এক ঘর পড়সী।
(১০)খাঁচার ভিতর অচিন পাখী কেমনে আসে যায়।
(১১) বলি মা তোর চরণ ধরে ননী চুড়ি আর করব না।
(১২) ভবে মানুষ গুরু নিষ্ঠা জাত ও ভবে লালন গুরু।
(১৩) যেখানে সাঁইয়ের বারামখানা যেখানে সায়ের।
(১৪) সময় গেলে সাধন হবে না দম থাকিতে দমের।
(১৫) একটা বধ হাওয়া লেগেছে গায় পাখি কখোন।
(১৬) আমি একদিনও না না দেখিলাম তারে সেএ।
(১৭) পাড়ে কে যাবি নবীর নৌকাতে আয় পাড়ের।
(১৮) আয় ধন্য ধন্য বলি তারে বেঁধেছে এমনও ঘর।
(১৯) কবে সাধুর চরন ধুলো পড়বে আমার গায়।
(২০) পারে লওয়ে যাও আমায়।

সর্বশেষ খবর