পাকিস্তান সরকার সৌদি আরবে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি ঠেকাতে তার নাগরিকদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) পাকিস্তানের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে মিডল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। এখন থেকে পাকিস্তানি নাগরিকদের ওমরাহ এবং হজে যাওয়ার আগে একটি হলফনামায় স্বাক্ষর করে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, তারা সৌদি আরবের মক্কা-মদিনায় ভিক্ষা করবে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি নতুন নিয়ম জারি করেছে, যার মাধ্যমে পাকিস্তানি নাগরিকরা ওমরাহ বা হজ পালন করতে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়বে না বলে নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে সৌদি আরব পাকিস্তান সরকারকে জানিয়েছিল কোনো পাকিস্তানি নাগরিক যদি সে ভিক্ষা করার উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে আসেন তবে আর তারা হজ বা ওমরাহ করার জন্য ভিসা প্রদান করবে না।
পাকিস্তানের ধর্ম মন্ত্রণালয় আরও জানায়, তারা ইতিমধ্যে ৪ হাজার ৩০০ ভিক্ষুককে ‘এক্সিট কন্ট্রোল’ লিস্টে পাঠিয়েছে এবং এই বিষয়ে তারা একটি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। এর মানে, যারা ভিক্ষাবৃত্তির উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যেতে চায়, তাদের যেতে দেওয়া হবে না।
নতুন নিয়মের আওতায়, যারা দলবেঁধে ওমরাহ বা হজে যেতে ইচ্ছুক, তাদের অনুমতি দেওয়া হবে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের পাঠানো ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি যাত্রীর কাছ থেকে ‘ভিক্ষা করব না’ মুচলেকা সংগ্রহ করতে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সম্প্রতি সৌদি আরবে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি একটি জাতির মর্যাদা ও সম্মানের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের নাগরিকদের পবিত্র হজ ও ওমরাহ সফরে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করা উদ্বেগের বিষয়। এরইমধ্যে পাকিস্তান সরকার সৌদি আরবকে অবহিত করেছে যে, তারা ভিক্ষাবৃত্তির জন্য সৌদি আরব পাঠানোর সঙ্গে জড়িত চারটি ট্রাভেল এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে।
সম্প্রতি, সৌদি আরবও ‘টুগেদার উই কমব্যাট বেগিং’ স্লোগানে ভিক্ষাবৃত্তিবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে এবং দেশটির কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে আইনি চ্যানেলের মাধ্যমে দান করার আহ্বান জানিয়েছে। এর পাশাপাশি, পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশ্য হলো তাদের নাগরিকদের ধর্মীয় সফরকে একটি সম্মানজনক ও পবিত্র অভিজ্ঞতা হিসেবে রক্ষা করা এবং বিদেশে গিয়ে সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা