ইসমাইল ইমন, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।।
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার উপর জোর দিয়েছে ‘আমরা চাটগাঁবাসী’। সংগঠনটি দ্রুত কাজ শেষ করার পাশাপাশি একটি সমন্বিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ ইউনিট গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। চট্টগ্রামের নগর উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ১৯ দফা উন্নয়ন প্রস্তাবনা নিয়ে সম্প্রতি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-র সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ‘আমরা চাটগাঁবাসী’র নেতৃবৃন্দ।
সভায় সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল এবিএম ইমরান চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নের জন্য দ্রুত মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ করার তাগিদ দেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাঙ্ক রোডের মিরসরাই-সীতাকুণ্ড অংশে ১০ লেনে উন্নীত করার প্রস্তাব বাতিল করে, এর পরিবর্তে পাহাড়ের পাদদেশে ৪ লেন এবং সাগর পাড়ে ৪ লেনের সড়ক নির্মাণ করা হলে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে। একই সাথে এই অঞ্চল পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হতে পারে।
সভায় ‘আমরা চাটগাঁবাসী’র সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দিন শ্যামল ফ্লাইওভারগুলোর নিচে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁর মতে, এই উদ্যোগটি নগরের ক্রমবর্ধমান যানজট সমস্যা নিরসনে সহায়ক হবে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গবেষক ড. কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী জেনারেল প্রসিকিউটর এডভোকেট কানিজ কাউসার রিমা, নিউজ গার্ডেন সম্পাদক কামরুল হুদা, এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক এডমিন ডা. আব্দুর রাজ্জাক খান,চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ফাইন্যান্স আজাদ চৌধুরী, অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আব্দুল বাতেন, এডভোকেট আব্দুল আজীজ, রাশেদুল আজীজ, এডভোকেট উম্মে ফেরদৌস, মো. ফরহাদ উদ্দিন সোহাগ সহ আরও অনেকে।
সভায় প্রকৌশলী নুরুল করিম বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার গুরুত্ব তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামের একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা নগরবাসীর জীবনে নানা সমস্যার সৃষ্টি করছে। তাই জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজনীয়তা আমরা উপলদ্ধি করছি। আর ঢাকা ট্রাংক রোডের প্রস্তাবটিও অত্যন্ত সময় উপযোগী পরবর্তী পদক্ষেপে আমরা এই বিষয়টি মাথায় রাখবো এবং আপনাদের গবেষণা কাজে লাগিয়ে আমরা যাবো ইনশাআল্লাহ।
এছাড়াও নেতৃবৃন্দ সভায় পরিবেশ রক্ষা এবং সবুজায়নের জন্য একাধিক উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, নগরের উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করাও অত্যন্ত জরুরি। তারা চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন।
এই মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উল্লেখ করেন যে, সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর উদ্যোগের মাধ্যমে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর করা সম্ভব। সেইসঙ্গে সিডিএ-র সাথে নিয়মিত মতবিনিময় এবং যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে নগরের উন্নয়ন ও পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
সভার শেষে ‘আমরা চাটগাঁবাসী’র নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের হাতে ১৯ দফা উন্নয়ন প্রস্তাবনার পান্ডুলিপি হস্তান্তর করেন। এবং চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।