কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।
বর্তমান দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিবেশ রক্ষার্থে পলিথিন ব্যবহারে নিষিদ্ধের ঘোষণা করেছেন। সরকার নিষিদ্ধ করার পরেও ফুলবাড়ী উপজেলার হাটবাজারে পলিথিনের ব্যবহার করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় পলিথিন নিষিদ্ধ করার পরেও বিভিন্ন হাট বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতারা অবাধে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার করেই যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এই প্রথম কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার খড়িবাড়ি বাজারের এক ব্যবসায়ী কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো ১ কেজির লবণের প্যাকেট তৈরি করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন।
সোমবার বিকালে উপজেলার খরিবাড়ী বাজার গিয়ে দেখা গেছে, সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নিজে থেকেই কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো এক কেজি লবণের প্যাকেট করে লবণ বিক্রি করছেন সমসের আলী নামের এক ব্যবসায়ী। তার এই উদ্যোগকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। অনেকেই তার এই কলাপাতা মোড়ানো লবণের প্যাকেট ও দোকানের ছবি সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যম পোষ্ট করেছেন।
লবণ ব্যবসায়ীর সমসের আলী (৬০)। তিনি ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের নাগদাহ এলাকার বাসিন্দা এবং তিনি খরিবাড়ী বাজার প্রায় ১৫ বছর খোলা মার্কেটে লবণের দোকান করে আসছেন।
লবণ ব্যবসায়ী সমসের আলী জানান, আমি পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনের সংবাদে দেখে জানতে পারি পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করে দেন সরকার। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নিজে উদ্যোগে কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো এক কেজি লবণের প্যাকেট করে বিক্রি করতে শুরু করি। কলা পাতায় লবণের প্যাটেক করায় বিক্রি কমছে কি না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, বিক্রি কমেনি। তবে আমার এমন উদ্যোগ দেখে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। আসলেই পলিথিন খুবই ক্ষতিকর পণ্য। তারপরও এখনো অনেকেই ব্যবহার করছেন। কর্তৃপক্ষ তৎপর হলে পলিথিন ব্যবহার কমে যাবে বলে জানান তিনি।
খরিবাড়ী বাজারে ক্রেতা ছামাদ জানান, আসলেই কলার পাতায় মোড়ানো লবণের প্যাকেট গুলো অনেক পর দেখে ভালো লাগলো। এমন ভাবে মোড়ানো হয়েছে ব্যাগে রাখলেও পড়বে না।
খরিবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী জায়দুল হক জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে খরিবাড়ী বাজারে পলিথিনের পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব উপায়ে পণ্য বিক্রির উদাহরণ হিসেবে কলার পাতায় লবণের প্যাকেট করে বিক্রি করছেন। তার অসাধারণ পদ্ধতি দেখে আরও একজন লবণ ব্যবসায়ী কলার পাতায় লবণ বিক্রি করছেন। এই পদ্ধতিতে ধরে রাখতে সবাই এগিয়ে আসলে ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার কমবে। তিনি আরও জানান, কলার পাতা সহজলভ্য, প্রাকৃতিকভাবে এটি পচনশীল এবং পরিবেশবান্ধব, যা পরিবেশ রক্ষা ও সচেতনতার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
রাবাইতারী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও সাহিত্যিক রেজাউল হক মনি জানান, সামাজিক যোগাযোগে ফেসবুকে কলাপাতা মোড়ানো লবণের প্যাকেটসহ লবণ ব্যবসায়ীকে অত্যন্ত ভালো লেগেছে। এই অসাধারণ দৃশ্যটি আজ ৪০ থেকে ৪৫ বছরে সব ব্যবসায়ী ক্রেতা বিক্রেতারা ব্যবহার করতেন। এরপর আস্তে আস্তে সেটি একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। আজ হঠাৎ কলাপাতা মোড়ানো লবণের প্যাটেক দেখে অত্যন্ত ভালো লেগেছে। এটি সত্যি পরিবেশ বান্ধব। আসলে আমরা এতদিন জেনেশুনে পলিথিনের ব্যবহার করেছি। বর্তমান সরকার যেহেতু পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন। আমাদের সবাইকে পরিবেশ-বান্ধব গাছের পাতা অথবা শট্টির পাতা এবং পাটজাত পণ্যের ব্যবহার করা উচিত।