সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা। সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সম্মেলন বিরোধী পক্ষের মিছিলে হামলার পর দুই পক্ষের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আহত হন।
এছাড়া এসময় বেশ কয়েকটি দোকানপাটে হামলা চালানো হয়। চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো পক্ষই মামলা দায়ের করেনি।
জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর বাঞ্ছারামপুর, কসবা, আখাউড়া উপজেলা ও পৌর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
ওই চারস্থানেই বিএনপির একাধিক পক্ষ রয়েছে। বাঞ্ছারামপুরের সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণার জন্য জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দকে লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয়। সোমবার সম্মেলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীরা বিক্ষোভের ডাক দেয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার সকাল থেকেই পুরো বাঞ্ছারামপুর উপজেলাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
দুপুর ১ টার দিকে উপজেলা সদরের পল্লী বিদ্যুতের মোড় থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আব্দুল খালেক ও অপর নির্বাহী সদস্য রফিক শিকদার নেতৃত্বে সম্মেলন বিরোধী একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে রামদা, লাঠি সোঁটা, হকিস্টিক নিয়ে হাজার-হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। মিছিলটি উপজেলার প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা সদরের মুসা মার্কেট এলাকায় আসা মাত্রই একাধিক ভবনের ছাদ থেকে ঢিল ছোড়া হয়। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে দেখা যায়নি।
অনেক পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এরই মধ্যে আহতদেরকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সংঘর্ষ চলাকালে উপজেলা সদরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে হাসপাতালে উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক শিকদার সাংবাদিকদের জানান, এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ অলি মোহাম্মদ রাসেল জানান, আহতদের মধ্যে অন্তত ২৫ জনের নাম হাসপাতালে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর বাইরে আরো অন্তত ২৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোর্শেদ আলম জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো পক্ষই এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেয়নি। তবে সংঘর্ষে জড়িতদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।