গ্রন্থঃ বরেন্দ্রভূমির বরেণ্যরা। পর্বঃ ১১৫ লেখকঃঅধ্যাপক মোঃ আব্দুর রাজজাক রাজু।
পরিচয়ঃ
বহুবিধ গুণের অধিকারী চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক। বাড়ি রাজশাহী সদরের মিয়াপাড়ায়।পিতা সুরেশ চন্দ্র ঘটক। পিতা ছিলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। মাতা ইন্দুবালা দেবী। বড় ভাই বিখ্যাত সাহিত্যীক মনিশ ঘটক।ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহীর মিয়াপাড়া এই গর্বিত ও বাসভবন টিতে দীর্ঘসময় অতিবাহিত করেছেন বড় ভাই মনিষ ঘটকের বন্ধু বাংলা সাহিত্যের অমর কথা শিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। মনিশ ঘটক ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ও তেভাগা আন্দোলনের নেতা।
ঋত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটক।ছেলে ঋত্ববান ঘটক। মেয়ে সংহিতা ঘটক ও সুস্মিতা ঘটক। ভ্রাতুষ কন্যা কলকাতার বিখ্যাত সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবী।ঋত্বিক ঘটক ছিলেন বাবা মায়ের ১১ তম সন্তান। এবং তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। জন্ম ও পারিবারিক চাকরি সূত্রে জিন্দাবাজার ঢাকায় বড় ভাই মনীষ ঘটকের নিকট ঋত্বিক ঘটক কিছুদিন ছিলেন ।
লেখাপড়াঃ
প্রাথমিক লেখাপড়া মিয়াপাড়ায়, মাধ্যমিক কলেজিয়েট স্কুল রাজশাহী।উচ্চ মাধ্যমিক রাজশাহী কলেজ (১৯৪৬) কৃষ্ণনাথ কলেজ বহরমপুর (১৯৪৮) ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এম,এ (১৯৫০) সাল।
ওপার বাংলায় গমনঃ
১৯৪৩ সালে পূর্ববাংলায় দুর্ভিক্ষের পর ঋত্বিক ঘটকের পরিবারের সবায়য় কলকাতায় চলে যান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঋত্বিক ঘটক বাংলাদেশের ছায়া ঢাকা মায়া ভরা সবুজের হাতছানিতে আবার ফিরে আসেন নিজ জন্মভূমি পূর্ব বাংলায়।
সাহিত্যসাধনাঃ
ঋত্বিক ঘটকের লেখা প্রথম নাটক “কালো সাওর” এটি তিনি ১৯৪৮ সালের রচনা করেন।এ ছাড়া তিনি সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে অনেকগুলি সাহিত্য রচনা করেন।
প্রথম সহকারি পরিচালকঃ
১৯৫১ সালে নিমাই ঘোষের “ছিন্নমূল” সিনেমার মধ্য দিয়ে তিনি প্রথম সিনেমা জগতে আত্মপ্রকাশ করেন।এর দুই বছর পর তার একক পরিচালনায় প্রথম সিনেমা “নাগরিক”।
চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য
পুরস্কার সমুহঃ শিল্পকলায়
পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত হন ১৯৭০ সালে।
মুসাফির চলচ্চিত্রের জন্য ভারতের ৫ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তৃতীয় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য
পুরস্কার লাভ করেন ১৯৫৭ সালে।
মধুমতী চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার বিভাগে ৬ষ্ঠ ফিল্মফেয়ার পুরস্কার-এ মনোনয়ন লাভ করেন১৯৫৯ সালে।
আরও পড়ুন:মাগুরা গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত
হীরের প্রজাপতি
চলচ্চিত্রের জন্য ১৬তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ শিশুতোষ চলচ্চিত্র পুরস্কার (প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক) লাভ করেন ১৯৭০ সালে। যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার বিভাগে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ১৯৭৪ সালে। তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রের জন্য সেরা পরিচালক বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন ১৯৭৪ সালে।
তার পরিচালিত বিখ্যাত ছবি।
• নাগরিক (১৯৫২, মুক্তি ১৯৭৭) • অযান্ত্রিক (১৯৫৮)
• বাড়ী থেকে পালিয়ে(১৯৫৮) মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০)
• কোমল গান্ধার(১৯৬১)সুবর্ণরেখা(১৯৬২মুক্তি ১৯৬৫)
. তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩) যুক্তি তক্কো আর ৷
গল্পো (১৯৭৭)
তার লেখা কাহিনী ও চিত্রনাট্যঃ
• মুসাফির (১৯৫৭) • মধুমতী (১৯৫৮)
• স্বরলিপি (১৯৬০) • কুমারী মন (১৯৬২)
• দ্বীপের নাম টিয়ারং (১৯৬৩) • রাজকন্যা (১৯৬৫)
• হীরের প্রজাপতি (১৯৬৮)
ঋত্বিক ঘটক নিজে অভিনীত চলচ্চিত্রঃ
• তথাপি (১৯৫০) • ছিন্নমূল (১৯৫১)
• কুমারী মন (১৯৫২) • সুবর্ণরেখা (১৯৬২, মুক্তি ১৯৬৫)
• তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩) • যুক্তি তক্কো আর
গপ্পো (১৯৭৭)
তথ্যচিত্র ও স্মট ফিল্মঃ
• তথাপি (১৯৫০) • ছিন্নমূল (১৯৫১)
• কুমারী মন (১৯৫২)• সুবর্ণরেখা (১৯৬২, মুক্তি১৯৬৫)
• তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩) • যুক্তি তক্কো আর
গপ্পো (১৯৭০)
অসমাপ্ত ছবি ও তথ্যচিত্রের তালিকা
• বেদেনি (১৯৫১) • কত অজানারে (১৯৫৯)
• বগলার বঙ্গদর্শন (১৯৬৪-৬৫) • রঙের গোলাপ (১৯৬৮) • রামকিঙ্কর (১৯৭৫) • আদিবাসীও কা জীবন (১৯৫৫)।