গ্রন্থঃ বরেন্দ্রভূমির বরেণ্য ব্যক্তি।পর্ব ১০৫ মোঃ আব্দুর রাজজাক রাজু সহকারী অধ্যাপক বাংলা।
পরিচয়ঃ
আবু হেনা মোস্তফা কামাল ১৯৩৬ সালের ১৩ই ডিসেম্বর পাবনা জেলার উল্লাপাড়া থানার গোবিন্দগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা এম শাহজাহান আলী তিনি স্কুল শিক্ষক ছিলেন মা খালেসুন নেশা তিনিও ভালো গান গাইতেন।
ভাই বোনঃ
তিন ভাইবোন বড় বোন সাবেরা খাতুন সামসুন আরা। স্বামী সাংবাদিক কেজি মোস্তফা।তাই পরবর্তী সময় সাবেরার নাম হয় সাবেরা মোস্তফা। সাবেরা মুস্তফা বেতারের ও টেলিভিশনের ভালো অভিনেত্রী ছিলেন। তৃতীয় ছোট ভাই গীতিকার আবু হায়াত মোহাম্মদ কামাল তিনি বাংলাদেশ বেতারে আঞ্চলিক পরিচালক ছিলেন।
লেখাপড়াঃ
পাবনা জেলা স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক।ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে বিএ অনার্স প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং ১৯৬৯ সালে ভাষা ও সাহিত্যে এম এ প্রথম শ্রেণীতে প্রথম ডিগ্রী লাভ করেন।
তিনি ১৯৬২ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবনঃ
আবু হেনা মোস্তফা কামাল পাবনায় এডওয়ার্ড কলেজ ১৯৫৯ সালে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্ম জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।
সাহিত্যসাধনাঃ
কাব্য সাহিত্য আপন যৌবন বৈরী ১৯৭৪ সন।
যেহেতু জন্মান্ধ ১৯৮৪সন আক্রান্ত গজল ১৯৮৮ সন।
আমি সাগরেরও নীল ১৯৯০ সন।
আরও পড়ুন:এই ফারুকীরা কীভাবে উপদেষ্টা পরিষদে আসেন: সারজিস আলম
পুরস্কারঃ
সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল আলাউল সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন ১৯৭৫ সনে। সুহৃদ সাহিত্য স্বর্ণপদক ১৯৮৬ সনে। একুশের পদক ১৯৮৭ সনে। আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ পদক ১৯৮৯ সনে। সাদত আলী আকন্দ স্মৃতি পুরস্কার ১৯৯১সনে (মরনোত্তর) তিনি লাভ করেন।
১৯৮৪ সালে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহা পরিচালক পদে ও ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলায় একাডেমির মহাপরিচালক পদে অধিষ্ঠিত হন।
স্মৃতিময় মহেন্দ্রক্ষণঃ
উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বাংলাদেশ সফরে আসলে আবু হেনা মোস্তফা কামাল তার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন।এর মাত্র কয়েকদিন পর আবু হেনা মোস্তফা কামাল ২৩ শে সেপ্টেম্বর ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ২৬ শে সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
আবু হেনা মোস্তফা কামালের বিখ্যাত গানঃ
(১) অনেক বৃষ্টি ঝরে তুমি এলে যেন একমুঠো রুদ্র।
(২) তুমি যে আমার কবিতা আমারও গানে রাগিনী।
(৩) তোমার কাজল কেশ ছড়ালো বলে এই রাত।
(৪) আমি সাগরের নীল নয়নে মেখেছি আমি।
(৫) এই পৃথিবীর পান্থশালায় গাইতে গিয়ে গান কেন।
(৬) মাঠের কবি বলে এসো নবীন নদীর মাঝি বলে।
(৭) আমি নদীর মত কত পথ ঘুরে তোমার কাছে।
(৮) নদীর মাঝি বলে এসো নবীন মাঠের কবি বলে।
(৯) সেই চম্পা নদীর তীরে দেখা হতো দুজনে যখন।
(১০) হাতের কাকন ফেলেছি খুলে কাজল নাই চোখে।
(১১) ভ্রমরের পাখনা যতদূর যাক না ফুলের দেশে।
(১২) ঐ যে আকাশ নীল হলো আজ সে শুধু তোমার। (১৩) অপমানে তুমি জ্বলে উঠে ছিলে সেদিন বর্ণমালা।
১৪) যায় যদি যাক প্রাণ তবু দিবো না দিবো না মান। (১৫) মহুয়ার মোহে দিন গেল যে তোমার কাছে।
(১৬) পথে যেতে যেতে দেখি আমি যারে ভালোবেসেছি