ইসমাইল ইমন, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত। চট্টগ্রাম ৭০ লাখ মানুষের শহর। এখানে সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে আমি একটি সুন্দর চট্টগ্রাম গড়তে চাই। এ চট্টগ্রাম শহরে যারা বাস করছে তাদের পাশে থেকে আমি কাজ করে যেতে চাই। কিছুদিন আগে হাজারী গল্লিতে একটা সমস্যা হয়েছিল। সেই বিষয়টি নিয়ে কিছু প্রতিনিধি আমার কাছে এসেছিল। আমি তখন ডিসির সাথে কথা বলে দোকানপাট খুলে দেওয়ার জন্য বলেছি। যাতে সেখানে কোন সমস্যা না হয়। এরপরে দোকান খুলে দেওয়া হয়। সেখানে একটি মামলা হয়েছে, মামলার কারণে অনেকেই দোকানে আসতে ভয় পাচ্ছে। আমি তাদেরকে বলেছি আপনারা একটা শান্তি সভা করেন। সবাইকে দাওয়াত দেন। কেউ আসুক বা না আসুক আমি মেয়র হিসেবে আসবো এবং আপনাদের পাশে থাকবো। আমি নয়, আমরা সবাই মিলে সুন্দর চট্টগ্রাম গড়ে তুলবো।
তিনি শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব উপলক্ষে চার দিন ব্যাপী ধর্মসভা মহোৎসব ও প্রসাদ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখানে বলুয়ার দিঘীর মহাশ্মশান সংস্কারের দাবির কথা এসেছে। মহাশ্মশান সংস্কারের ব্যাপারে যেটা দরকার সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আমি করে দিবো। আর নতুন একটি মহাশ্মশানের কথা বলা হয়েছে। আসলে নতুন মহাশ্মশান করার মত জায়গা সিটি করপোরেশনের নেই। তাই বন্দর অথবা রেলওয়ের কোন জায়গা যদি আপনারা ঠিক করেন তাহলে আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবেন। আমার কাছে কোন বৈষম্য থাকবে না। আমি সেবক হিসেবে আপনাদের পাশে থাকবো। এই চট্টগ্রামকে নিরাপদ শহরে পরিণত করবো। সন্ত্রাসীদের কোন স্থান এই চট্টগ্রামে হবে না।
তিনি বলেন, আমরা সত্যিকার অর্থেই একটা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক একটা সমাজ নির্মাণ করবো। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আজকে সেই সুযোগ আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। আমরা একটা দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করে সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি, যেখানে আমাদের একটা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে আমাদের মধ্যে কোনও ভেদ থাকবে না, ভেদাভেদ থাকবে না, ধর্মান্ধতা থাকবে না, সাম্প্রদায়িকতা থাকবে না। এক বর্ণের সঙ্গে আরেক বর্ণের কোনও প্রতিশোধ প্রতিহিংসা বা ঘৃণার কোনও রাজনীতি থাকবে না। অতীতে যেমন আমরা আপনাদের প্রতিটি সমস্যায় পাশে এসে দাঁড়িয়েছি, ঠিক একইভাবে আগামীতেও আপনাদের সঙ্গে থাকবো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রী শ্রী রাস উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক লায়ন আর কে দাশ রুপু। আশীর্বাদক ছিলেন রাঙমাটি ওমকেশ্বর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী বিদাহনন্দ পুরী মহারাজ। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুজিত কুমার বিশ্বাস মন্টু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাস মহোৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব লায়ন তপন কান্তি দাশ। শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সদস্য সাংবাদিক বিপ্লব পার্থের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, বিমল কান্তি দে, বিশিষ্ট ভাগবতীয় বক্তা অধ্যাপক স্বদেশ চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অর্পণ ব্যানার্জী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল, ভাগবতীয় বক্তা সুন্দর তৃষ্ণ দাস, প্রধান শিক্ষক উত্তম চক্রবর্তী, শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক লায়ন শংকর সেনগুপ্ত, দক্ষিণ জেলার সভাপতি অরুপ রতন চক্রবর্তী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সদস্য সচিব বাপ্পী দে, দক্ষিণ জেলার সদস্য সচিব উজ্জ্বল বরণ বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় সদস্য দিপক চৌধুরী কালু, বিপ্লব চৌধুরী বিল্লু। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন ঘোষ বাদশা, সুজন দাশ, বাবলু দেবনাথ প্রমুখ।