জাকারিয়া শেখ,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
বয়সের ভারে ন্যুব্জ, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ,শরীরের গঠন জীর্ণশীর্ণ কাছ থেকে দেখলেই বোঝা যায় রোগ–শোকে অনেকটাই ক্লান্ত ৮০ বছর বয়সী হতদরিদ্র বিধবা সুখজাদী বেওয়া। হতদরিদ্র এই বিধবা ভাতা ভোগী মা -মেয়ের পরিবারটি খেয়ে না–খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করচ্ছে।এখন বিধবা ভাতার টাকায় চলে না বৃদ্ধার সংসার।বর্তমানে চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে মূল্য বৃদ্ধি জনগণের ক্রয়ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এমন অসহনীয় পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়েছেন বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগীরা। জীবন জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছেন ভিক্ষা বৃত্তিতে।
সজেমিনে গিয়ে দেখা যায়,কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী গ্রামের বিধবা ভাতা সুবিধা ভোগী সুখজাদী বেওয়ার পরিবার। বয়সের ভারে নৃঞ্জ সুখ জাদী বেওয়ার পাঁচ বছর আগে মারা যান স্বামী হ্যাসপেসু মিয়া। স্বামীর রেখে যাওয়া ৪ শতক জমির ভিটামাটি টুকুও বারোমাসিয়া নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ায় একই গ্রামের শাহালম মিয়ার বাড়ীর পেছনে একটি টিনের চালায় মেয়ে মরিয়মসহ বসবাস শুরু করেন। বয়সের ভারে নৃঞ্জ সুখ জাদী বেওয়াকে কেউ কাজ দিতে চায় না।অনেক কষ্টে বিধবা ভাতা পেলেও সেই টাকা দিয়ে চলে না মা মেয়ের সংসার।বাধ্য হয়ে বেঁচে নেন ভিক্ষাবৃত্তি পেশা কিন্তু পায়ে গোদরোগ নিয়ে চলাচল করতে না পাড়ায় ভিক্ষাও জোটেনা তার।বর্তমানে তিনি বারোমাসিয়া নদীর তীর সংলগ্ন মানিক মিয়ার জমিতে ছোট একটি চালা করে স্বামী পরিত্যক্ত মেয়ে মরিয়ম (৪৫) নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে কোন রকমেই দিন পাড় করছেন।
সুখ জাদী বেওয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, জীবন দুইটা বাঁচার তাগিদে এই বৃদ্ধা বয়সেও পায়ে গোদরোগ নিয়ে ভিক্ষা করা লাহে বাহে। দিনে এক থেকে দেড় সের চাউলো পাইনা,তা দিয়ে আদা পাগলী মেয়েটা নিয়া কোনো রকমেই দু-মুঠো ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে আছি । এমনকি ভিক্ষাবৃত্তি করে কোন রকমেই মানবেতর জীবন যাপন পাড় করা বৃদ্ধার একটি সরকারি ভাবে মাথা গোঁজার জায়গাটুকু পায়নি এই পরিবারটি বলে জানান এই গ্রামের বাসিন্দা নুরুনবী মিয়া।
আরও পড়ুন:লক্ষীপুরে সড়ক বাতি প্রজ্বলন কার্যক্রম উদ্ভোদন
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান,এই রকম কোন প্রকল্প আসলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া পরিবারটিকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি ।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো: জামাল হোসেন জানান, ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ীতে বসেই ভাতার টাকা পাচ্ছেন ভাতাভোগিরা।তিন মাস পরপর যে টাকা পান তাদিয়ে সংসার চালানো খুবই কঠিন।ভাতা বাড়ানোর বিষয়টি একান্তই সরকার ও সমাজ সেবা মন্ত্রণালয়ের বলে জানান তিনি।