পরিচয়
পরিচয় ফেরদৌসী রহমান ২৮ জুন ১৯৪১ সনে নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলায় এক গুণী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।স্বামী রেজাউর রহমান।তার দুই সন্তান এবং তারা তিন ভাইবোন।
পিতা
বাংলাদেশে ভাওয়াইয়া ও পল্লীগীতির জনক কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী আব্বাস উদ্দীন আহমেদ।যিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সুখ দুঃখের সাথী হিসেবে পরিচিত এবং তার অনুপ্রেরণাতেই কুচবিহার থেকে আব্বাস উদ্দিনের পূর্ব বাংলার রংপুরে আসা।আব্বাস উদ্দিন ১৯০১ সালের ২৭ অক্টোবর তুফানগঞ্জ মহকুমার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বড় ভাই
বাংলাদেশ নবম প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল মোস্তফা কামাল ছিলেন বার,এট,ল।তিনি ১৯৩৩ সালের ৯ই মে নীলফামারী ডোমারে জন্মগ্রহণ করেন।মোস্তফা কামালের স্ত্রী হোসনে আরা কামাল।কন্যা বাংলাদেশ প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ডঃ নাসিদ কামাল মোস্তফা কামালের মৃত্যু। মৃত্যুঃ ৫ জানুয়ারি২০১৬সন। গুলশান ঢাকা।
মেঝভাই
বাংলাদেশের আর এক বিখ্যাত কন্ঠ শিল্পী মোস্তফা জামান আব্বাসী। আব্বাসীর জন্ম ৮ ডিসেম্বর ১৯৩৬ স্ত্রী আসমা খাতুন।দুই কন্যা সামিরা আব্বাসী ও শারমিনী আব্বাসী।
লেখাপড়া
ফেরদৌস রহমান ১৯৫৬ সনে মেট্রিক পরীক্ষা দেন এবং ২৬ শে জুন রেজাল্ট বের হয়।তিনি বোর্ড স্ট্যান্ড করেন এরপর সংগীত শিক্ষার জন্য ট্রিনিটি কলেজ সব মিউজিক লন্ডনে গমন করেন এবং সংগীতের উপরে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে।
সঙ্গীত ওস্তাদ
প্রথম ওস্তাদ পিতা আব্বাস উদ্দিন আহমদ।অতপর মোঃ হোসেন খসরু,মো ইউসুফ খান কোরেশি। কাদের জামেরি, গুল মোহাম্মদ খান প্রমুখো বিখ্যাত সঙ্গী তজ্ঞের কাছে তিনি সংগীতের তালিম গ্রহণ করে।
রেডিওতে প্রথম অনুষ্ঠান
মাত্র ৮বছর বয়সে খেলাঘর নামক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তার বেতার জীবন শুরু হয়।১৯৪৪ সালে তিনি প্রথম রেডিওতে গান পরিবেশন করেন।এরপর ১৯৫৬ সালে রেডিওতে বড়দের অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন।
বিয়ে
১৯৬৬ সনের ২৬ অক্টোবর ফেরদৌসী রহমানের বিয়ে হয় স্বামি মোহাম্মদ রেজাউর রহমান। শিক্ষা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।পেশা যন্ত্র প্রকৌশলী। হোটেল শাহবাগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে অনুষ্ঠান হয়। সংসার জীবনে ফেরদৌসী রহমানের দুই ছেলে।
সন্তান-সন্ততি
বড় ছেলেঃ রুবাইয়াৎ রহমান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে বসবাস করেন। চাকরি করেন ফেসবুক কোম্পানিতে। রুবাইয়াতের তিন সন্তান।ছোট ছেলে রাজিন রহমান লন্ডন প্রবাসী।সেখানে তিনি চাকরি করেন। রাজিনের দুই মেয়ে।
ফিল্টার তৈরীর কারখানা
ফেরদৌস রহমানের স্বামী রেজাউর রহমানের বাংলাদেশে ফিল্টার তৈরীর একটি ইন্ডাস্ট্রি ছিল। দুই ছেলেই বিদেশে সেটেল হওয়ার পর তিনি ইন্ডাস্ট্রিটি বিক্রি করে দেন।
সংগীত পরিচালক
১৯৬০ সালে বিখ্যাত পরিচালক রবিন ঘোষের সঙ্গে যৌথভাবে ফেরদৌসী রহমান রাজধানীর বুকে নামক একটি চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম গান
১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭:০০ টায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি প্রথম গান পরিবেশন করেন।
প্রথম চলচ্চিত্রে গান
১৯৬০ সালে “আশিয়া” চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান পরিবেশন করেন।১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে তিনি বহু চলচ্চিত্রের কণ্ঠশিল্পী হিসেবে যুক্ত ছিলেন। এ পর্যন্ত তার ৫০০০ গান রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও ৩ টি লংপ্লে, ৫০০টি ডিক্স রেকর্ড, ও ১৯ টি গানের ক্যাসেট বের হয়েছে
এসো গান শিখি
বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিশুদের জনপ্রিয় গান শিখার অনুষ্ঠান এসো গান শিখি ২৭শে ডিসেম্বর থেকে শুরু করে অদ্বাবদি সুনামের শহীদ শিশুদের গান শিক্ষায় সুনাম অর্জন করে চলেছে।
পুরস্কার
১৯৬৩ সালে লাহোর চলচ্চিত্র সাংবাদিক পুরস্কার ১৯৬৫ সালে প্রেসিডেন্ট প্রাইস অফ পারফরমেন্স পুরস্কার ১৯৭৫ সালে টেলিভিশন পুরস্কার। ১৯৭৭ সালের শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক জাতীয় পুরস্কার ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার ১৯৭৭ সালে একুশে পদক নাসির উদ্দিন গোল্ড মেডেল পুরষ্কার। মাহবুব উল্লাহ গোল্ড মেডেল পুরষ্কার, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পুরস্কার। ২০১৩ আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার সহ বহু পদক ও পুরস্কার লাভ করেন।
অধ্যাপক মোঃ আব্দুর রাজজাক রাজু।
গ্রন্থঃ বরেন্দ্রভূমির বরেণ্যরা। পর্বঃ ৪২