Homeজাতীয়জয়পুরহাট জেলার জীবন্ত কিংবদন্তি বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম।

জয়পুরহাট জেলার জীবন্ত কিংবদন্তি বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম।

লেখকঃ অধ্যাপক মোঃ আব্দুর রাজজাক (রাজু)।

পরিচয়ঃ
মোহাম্মদ খুরশিদ আলম। জন্ম ১ আগস্ট ১৯৪৬সন।গ্রামঃ হারুন্জা। উপজেলাঃকালাই।জেলাঃ জয়পুরহাট। পিতাঃ এ,এফ তসলিম উদ্দীন আহমেদ। মাতাঃ মোসা মেহেরুন নেছা।দুই কন্যা বড় মেয়ে মেহেরিন আলম। ছোটো মেয়ে মেহনাজ আলম।

বেড়ে ওঠাঃ
তিনি বেড়ে উঠেছেন পুরান ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডের একটি বাড়িতে তিনি মাত্র তিন বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় আসেন চাচা বাংলাদেশের জনপ্রিয় গীতিকার ডাক্তার আবু হায়দার মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান। খুরশিদ আলমের হাতে খড়ির ওস্তাদ চাচা জনাব সাজেদুর রহমান রবীন্দ্র সংঙ্গীত গাইতেন।

সংগীত জীবনঃ
জনাব খুরশিদ আলম ১৯৬২ সনে রেডিও পাকিস্তানে আধুনিক সংগীত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সংগীত জীবন শুরু করেন। ১৯৬৩ সনে বেতারের রবীন্দ্র সংগীত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন।

স্টুডিওর বাইরেঃ
১৯৬৫ সালে শেখ বোরহানউদ্দিন কলেজে খুরশিদ আলম প্রথম গিয়েছিলেন রবীন্দ্র সংগীত ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকার রবীন্দ্র সংগীত গাওয়া বন্ধ করে দেয়।তখন তিনি রেডিওতে আধুনিক গানের শিল্পী হওয়ার জন্য অডিশন দেন।


আরও পড়ুন:রাজবাড়ীতে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, হাতেনাতে যুবক আটক


জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আব্দুল আলিম ও আব্বাস উদ্দিন আহমেদের পর মোহাম্মদ খুরশীদ আলম আপন প্রতিভাবলে দরাজ মিষ্টি মধুর শুরে সংগীত ভবনে তার শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন।

সেই সময়েঃ
শিল্পী মাহমুদুন্নবী, আপেল মাহমুদ,বশির আহমেদ, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, রথীন্দ্রনাথ রায়, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী,ও সুবীর নন্দীর মতো গুণী শিল্পীরা তার সমকক্ষ ছিলেন। সত্তর ও আশির দশকে বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম রেডিও ও টেলিভিশনের যুগে বাংলাদে শের শ্রোতাদের নয়নমণি ছিলেন জয়পুরহাট জেলার এই কৃতি সন্তান।

ওস্তাদঃ
জনাব খুরশিদ আলম বেতারে গান গাইতে এসে প্রথম পরিচয় হয় প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক সমর দাসের সঙ্গে।এরপর পরিচয় হয় আর এক বিখ্যাত সংগীত পরিচালক আজাদ রহমানের সঙ্গে।১৯৬৭ সালে আজাদ রহমানের সুরে কন্ঠ দেন “তোমার দু হাত ছুঁয়ে শপথ নিলাম থাকব তোমারি আমি কথা দিলাম”এবং সেই বছর জনপ্রিয়তা পায় আরেক গান চঞ্চলা দুই নয়নে বলো না কি খুঁজছো”

প্রথম সিনেমায় গানঃ
১৯৬২সনে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত সিনেমা আগন্তকে” তিনি প্রথম সিনেমার গান পরিবেশন করেন গানটি শিরোনাম ছিলোঃ বন্দী পাখির মত মনটা কেঁদে মরে”।

গানের সংখ্যাঃ
১৯৬৯ সাল থেকে ২০০৭সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় ৫০০শত চলচ্চিত্রে সংগীত পরিবেশন করেন।তিনি ৪২৫টি সিনেমায় গান পরিবেশন করেন।

পুরস্কারঃ
সংগীত ভুবনে তার অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত করেন।এই মহান গুণী শিল্পী বর্তমানে মাঝে মাঝে বিভিন্ন বাংলা টি,ভি চ্যানেলে আসলেও অধিকাংশ সময় অবসর জীবন যাপন করছেন।

শিল্পীর গাওয়া জনপ্রিয় গানঃ
(১)তোমরা যারা আজ আমাকে ভাবছো মা (লালু ভুলু) (২) মাগো মা ওগো মা আমারে বানাইলে তুমি (সমাধি) (৩) বাপের চোখের মনি নয় মায়ের সোনার (জোকার) (৪)মাগো তোর কান্না আমি সইতে পারিনা দোহাই মা।
(৫) চুমকি চলেছে একা পথে সঙ্গী হলে (দোস্ত দুশমন)
(৬) বন্দী পাখির মত মনটা কেঁদে মরে (আগন্তুক)
(৭) ধীরে ধীরে চল ঘোড়া সাথী বড় আন (শাপ মুক্তি)
(৮) ওদুটি নয়নে স্বপনে চয়নে নিজে (অশ্রু দিয়েলেখা)
(৯) তোমার দুহাত ছুঁয়ে শপথ নিলাম (আধুনিক গান)
(৯) চঞ্চলা দুই নয়নে বলো নাকি খুচ্ছ(আধুনিক গান)
(১০) ঐ আকাশকে সাক্ষী রেখে ওই বাতাসকে সাক্ষী
(১১)ঐ আঁকাবাঁকা নদীর ধারে ছিলো(আলী হোসেন)
(১২) একটি রাতের গল্প তুমি হাজার রাতের মর্জিনা। (১৩)যদি বউ সাজো গো আরো সুন্দর লাগবে গো।
(১৪) ও অনুপমা ও নিরুপমা পাখির নীড়ের মত দুটি
(১৫) ও সাগর কন্যারে কাঁচা সোনা গায়ে তোর রুপের।
(১৬) শোন ওগো মনেরও মিতা শোনো ওগো।
(১৭) হীরার চেয়ে দামি সোনার চেয়ে নামি আমার না
(১৮) প্রেম করেছো তুমি আর মন দিয়েছি আমি।
(১৯) কথা দাও সাথী হবে কথা দাও সাথী হবে।
(২০) চুপি চুপি বল কেউ জেনে যাবে জেনে যা( নিশান) (২১) সোনা চান্দি মতি মহল কিছুই চাইনা শুধু একটা।
(২২) সংগীত ভুবনে লেখাপড়া জানতাম যদি আমার।
(২৩) ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই আমি হলেম।
(২৪) মুন্না আমার লক্ষী সোনা আমার নয়ন মনি।
(২৫) ও আমি বাঘ শিকার যাইমু বন্দুক লইয়া রেডি।

সর্বশেষ খবর