Homeবিবিধদস্যু বনহুর সিরিজের জনক বগুড়ার রোমেনা আফাজ

দস্যু বনহুর সিরিজের জনক বগুড়ার রোমেনা আফাজ

পরিচয়

রোমেনা আফাজ ১৭ ডিসেম্বর ১৯২৬ সালে বগুড়া জেলার শেরপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পরবর্তীতে বাসা করে বসবাস করেন বগুড়া শহরের জলেশ্বরী তলায়। যা বর্তমানে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত আছে। পিতা মোহাম্মদ কাজেম উদ্দিন আহমেদ। মাতা বেগম আছিয়া খাতুন স্বামী মোঃ আফাজ উদ্দিন স্বামীর পেশা ছিল ডাক্তারি। স্বামীগৃহ বগুড়া জেলার সদর থানার ফুলকোড গ্রামে।

প্রথম লেখা

রোমেনা আাফাজের লেখালেখি শুরু করেন মাত্র নয় বছর বয়স থেকে। তার প্রথম লেখা একটি “ছড়া বাংলাদেশের চাষী” প্রকাশিত হয় কলকাতার মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকায়।

লেখার ধরন

রোমেনা আফাজ তার সুদীর্ঘ লেখনি জীবনে অসংখ্য ছোট গল্প কবিতা কিশোর উপন্যাস সামাজিক উপন্যাস গোয়েন্দা সিরিজ ও রহস্য সিরিজ রচনা করে গেছেন।

দস্যু বনহর সিরিজ

তিনি মূলত দস্যু বনহুর সিরিজের জন্য বাঙালি পাঠক সমাজে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ৮০ ও ৯০ এর দশকে সেই সময় রোমানা আফেজের বই পড়ে নাই এমন সাহিত্য প্রেমির সংখ্যা নাই বললেই চলে। তার লেখা রহস্য সিরিজ দস্যু বনহর চরিত্রের জন্যই তিনি সর্বাধিক জনপ্রিয়।

তার উপন্যাস নিয়ে সিনেমা

তার লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সিনেমার সংখ্যা ছয়টি। জনপ্রিয় এই চলচ্চিত্র গুলি হলো-(১)কাগজের নৌকা (২)মোমের আলো(৩)মায়ার সংসার (৪)মধুমিতা (৫)মাটির মানুষ (৬) দস্যু বনহুর।

তার লেখা মোট উপন্যাস

রোমেনা আফাজ আজীবন খেটে খাওয়া একেবারে সাধারন মানুষের জন্য লিখে গেছেন এই সাহিত্যিকের লিখা বইয়ের সংখ্যা ২৫০ টি। রুমেনা আফাজ সাহিত্য জগতে অত্যন্ত প্রভাবময়ী লেখিকা ছেলেন।

সমাজসেবা

সমাজের সাধারণ মানুষের সেবা করার জন্য তিনি যখন যেখানে যে সংগঠন দিয়েছেন তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজের সমাজের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছেন। তিনি মোট প্রায় ৩০ টি সমাজসেবা মূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এ এক বিরল ঘটনা।

এগুলির মধ্যে অন্যতম

জাতীয় মহিলা সংস্থা বগুড়া। সাবেক চেয়ারম্যান ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। আজীবন উপদেষ্টা মহিলা জাতীয় ক্রীড়া সংস্হা। সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান উদীচী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী বগুড়ায়। সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।
সাবেক উপদেষ্টা। সাবেক সদস্য শিশু একাডেমি বগুড়া উপদেষ্টা বাংলাদেশ রাইটার্স ফোরাম বগুড়া।

পুরস্কার ও সম্মাননা

২০১০ সালে সাহিত্য ও শিল্পকলায় অসাধারণ অবদানের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার- স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন। নারী বিকাশ সংস্থার পুরস্কার। বগুড়া থেকে একুশে পদক। গণ উন্নয়ন গ্রন্থগার পুরস্কার। নারী মুক্তি আন্দোলনের সম্মাননা পদক। এছাড়াও তিনি অনেক পুরুষ্কার লাভ করেন।

সাহিত্যের প্রশংসনীয় বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন সংগঠন থেকে পেয়েছেন বহু পুরস্কার। রোমেনা আফাজ সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে সাহিত্যে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠন থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।তন্মধ্যে ঢাকায় নারী গ্রন্থ প্রবর্তনা গুণীজন সংবর্ধনা দেয়া হয় ১৯৯৯ সনে।

মৃত্যু

নারী সাহিত্যের এই অগ্রদূত ২০০৩ সালের ২জুন মৃত্যু বরণ করেন।

লেখকঃ অধ্যাপক মো আব্দুর রাজজাক রাজু।
গ্রন্থঃ বরেন্দ্রভূমির বরেন্যরা। পর্বঃ ৪৮

সর্বশেষ খবর