Homeজেলাঢাক ডাল পিটিয়ে শুরু হচ্ছে কাত্যায়নী উৎসব

ঢাক ডাল পিটিয়ে শুরু হচ্ছে কাত্যায়নী উৎসব

এস এম শিমুল রানা, মাগুরা প্রতিনিধি।।

ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে মাগুরায় শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা উৎসব। মাগুরা শহরসহ বিভিন্ন এলাকা বর্ণিল সাজে সেজেছে এ উৎসবকে ঘিরে ।

বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে পূজা উৎসবের সূচনা হলেও মুল আনুষ্ঠানিকতা ও দর্শনার্থীদের সমাগম শুরু হয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে। ১৩ নভেম্বর মঙ্গলবার দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এর আনুষ্ঠানিকতা।

কাত্যায়নী উৎসব উপলক্ষে প্রতিবছর লাখো মানুষের ঢল নামে মাগুরায়। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের মিলন ঘটে এ উৎসবে। দুর-দুরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীর উপস্থিতি অনেক বলে মনে করেন আয়োজকরা।

শহরের নান্দুয়ালী, জামরুলতলা, সাতদোহাপাড়া, নতুন বাজার, বাটিকাডাঙ্গা, উপজেলা পাড়া শিবরামপুর, পারনান্দুয়ালীসহ প্রতিটি পূজা মন্ডপকে ঘিরে তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন গেট, প্যান্ডেল, তোরণ। আধুনিক লাইটিংয়ের মধ্যমে সাজানো হয়েছে পূজা মন্ডপগুলো। পূজা মন্ডপগুলোর নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবের পাশাপাশি পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে দায়িত্ব পালন করবে একাধিক ভ্রাম্যমান দল। পূজা উপলক্ষে মেলা বসেছে শহরের ছানা বাবুর বটতলা ও উপজেলা পাড়া মন্ডপস্থলে ।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি বাসুদেব কুন্ডু জানিয়েছে, এ বছর জেলায় মোট ৮১ টি মন্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে পৌর এলাকায় ১৬ টি, সদর উপজেলায় ২২টি, শ্রীপুরে ১৩টি, মহম্মদপুরে ১০টি ও শালিখায় ২০ টি মন্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জানা যায়, ১৯৫০ সালে শহরে পারনান্দুয়ালী এলাকার জনৈক সতীশ মাঝি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম এ পূজা উৎসব শুরু করেন। দুর্গা পূজার সময় পেশাগত ব্যস্ততা থাকায় জেলে সম্প্রদায়ের সুবিধার্থে তার এলাকায় তিনি দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা সংক্ষিপ্ত করে প্রথম এককভাবে কাত্যায়নী পূজা শুরু করেন। যা ব্যাপকতর হতে হতে বর্তমান পর্যায়ে এসে পড়েছে।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব কুন্ডু বলেন, ধর্মীয় শাস্ত্রমতে দাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের আগে গোপীবালা বৃন্দ যুমনা তীরে শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর, বন্ধু, স্বামী, পুত্র হিসাবে আরাধনা করত। তাদের একমাসব্যাপী আরাধনা সেসময় কাত্যায়নী পূজা হিসেবে চিহ্নিত হত। যার সময়কাল ছিল কার্তিক ও অগ্রহায়ন মাস। প্রতিমা স্থাপনের ক্ষেত্রে দূর্গা পূজার আদলেই সবকিছু নির্মিত হত। তবে অতিরিক্ত হিসেবে দেবী দূর্গার কোলে শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি স্থাপন করা হত। যার অর্থ দেবী দূর্গার আরাধনার মাধ্যমে কৃষ্ণের সান্নিধ্য পাওয়া।
জেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ ঘুরে বিভিন্ন লোকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ‘কাত্যায়নী পূজা মাগুরা জেলার ঐতিহ্যবাহী । এ পূজা ও উৎসব ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাগুরায় আসেন অনেক দর্শনার্থী। এছাড়া ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও মানুষ আসে।

এ বিষয়ে মাগুরা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ মোল্ল্যা জানান , প্রতিবারের মতো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য পুলিশের টহল থাকবে। পূজা চলাকালীন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এ পূজায় জেলা পুলিশ, ডিবি , র‌্যাব সেনাবাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটসহ , নিরাপত্তার কাজে, নিয়োজিত থাকবে।

সর্বশেষ খবর