কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদী অববাহিকায় প্রায় ৪ শতাধিক চর ও দ্বীপ রয়েছে। এরই মধ্যে অসংখ্য চরাঞ্চলের ধু-ধু বালু জমিতে কৃষকরা আগাম আলু রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গত বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা আগাম আলু চাষে ঝুঁকেছেন। ৫৫ থেকে ৬০ দিনে এসব আগাম আলু উত্তোলন করে একই জমিতে ভূট্টা, সরিষা সহ অন্যান্য ফসল চাষ করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলার কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, উলিপুর ও রাজারহাটসহ প্রায় সব উপজেলা মিলে ৭ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। পুরোদমে আলু চাষ শুরু না হলেও চরাঞ্চলের কৃষকরা আগাম আলুর দাম পাওয়ার আশায় আলু চাষ শুরু করেছেন।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা আগাম আলু চাষে প্রতিদিন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবং রোগ বালাইয়ের তেমন কোন প্রাদুর্ভাব না হলে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।
আলু চাষিরা জানান, চরাঞ্চলের বালু জমিতে সেচ, সার ও কীটনাশকের খরচ বেশি হওয়ায় উৎপাদিত আলুর বাজার নিয়েও চিন্তিত তারা। তবে তাদের প্রত্যাশা ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে এ আলু উত্তোলন করে আগাম নতুন আলুর বাজার ধরার পাশাপাশি একই জমিতে ভুট্টা, সরিষাসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারবেন।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজার এলাকার দুলু মিয়া বলেন, প্রায় ৫০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আলু রোপণ করছি। কিন্তু এবছর আলুর বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বেশি। এর পরেও যদি আবহাওয়া ও বাজার দর ভালো থাকে তবে লাভের আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি যদি আলুর বীজের দাম আর কিছুটা কম থাকতো আমাদের জন্য ভালো হতো।
আরেক চাষী খোরশেদ আলম বলেন, মুন্সিগঞ্জ থেকে আলুর বীজ এনে জমিতে লাগিয়েছি। পরে বৃষ্টি হওয়ার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। পরে আবারও জমি তৈরি করে লাগাচ্ছি। খরচ বেশি হলেও যদি আবহাওয়া ঠিক থাকে তাহলে লাভবান হতে পারবো আমরা।
সাঈদুর নামের আরও এক চাষী বলেন, বাজারে আলুর বীজ ১০০ টাকা কেজি। তার পরেও কিনে জমিতে লাগিয়েছি। পরে বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। পরে মুন্সিগঞ্জ থেকে আবারও ৮০ টাকা কেজিতে এনে আবারও রোপণ করছি। সার ও বীজের বেশি দাম থাকার কারণে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কৃষকরা আলুর বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করে দিয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে কৃষকরা এই আলু বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন।