‘ফেইসবুকে কটূক্তি’র জের ধরে বাইরে বিক্ষোভকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে শিল্পকলা একাডেমি নাটকের শো চলার মাঝপথেই সেটি থামিয়ে দিতে বাধ্য হলেন নতুন মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে মাসুম রেজার লেখা ও পরিচালনায় ‘নিত্যপুরান’ নাটকটি ‘দেশ নাটক’ মঞ্চস্থ করছিল শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালায়।
এই সময়ে শিল্পকলার গেইটে বিক্ষোভকারীরা নাটক বন্ধের জন্য ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়। এরপর তারা দেশ নাটকের দলনেতা এহসানুল এজাজ বাবুকে তাদের হাতে তুলে দেয়ার দাবি জানায় এবং নাটকটি বন্ধ করে দিতে বলে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, এহসানুল এজাজ ফেইসবুকে বর্তমান সরকার নিয়ে ‘কটাক্ষ’ করেছেন। এক পর্যায়ে শিল্পকলার প্রধান সৈয়দ জামিল সেখানে গিয়ে মধ্যস্থতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
বিক্ষোভকারীদের কোনওভাবে নিবৃত্ত করতে না পেরে তিনি মঞ্চে চলতে থাকা নাটকটির মাঝখানে উঠেই সেটি বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেন। মঞ্চে উঠে তিনি বলেন, “… এতোক্ষণ (ঠেকানোর) যুদ্ধ করলাম তো, এখন যেটা হবে এসে উত্তেজিত জনতা এসে আগুন দিয়ে দিবে। সেটি আরও ভয়ঙ্কর হবে।”
ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে সেখানে থাকা নাটকটির রচয়িতা ও নির্দেশক মাসুম রেজা বলেন, ”আজকে আমাদের দলের নাটকের শো ছিল নিত্যপুরাণের এবং এই সময়ে আমরা যখন টিকিট সেল করছি ওইখানে প্রায় ২০-২২ জন এসে একটা ব্যানার টাঙায়। ব্যানারে লেখা ছিল, দেশ নাটকের বাবুকে আমাদের হাতে তুলে দিন। এরকম একটা মেসেজ লেখা ছিল…। ফলে তারা বাবুকে বের করে না দিলে আমাদের নাটক করতে দেবে না। এটা আমি শিল্পকলার ডিজি জামিল ভাইকে জানালে উনি দ্রুতই আসেন । উনি এসে ওদের সাথে কথা বললেন ওদেরকে শান্ত করলেন এবং আমাকে এসে বললেন যে, আপনারা নাটক করেন, ভালো একটা শো করেন…।”
এরপর শো শুরু হলেও। ঘটনা থামেনি। মাসুম রেজার ভাষায়, “এরপরে আবারো কিছুক্ষণ পরে তারা আসে এবং ওই একই দাবি জানাতে থাকে যে, ‘আমরা এই নাটক হতে দেব না যদি উনি (মানে বাবু) এখানে থাকেন…’। এই অবস্থার ভিতরেই নাটক চলছে। জামিল ভাই প্রচুর চেষ্টা করেছেন। উনার সাথে শিল্পকলা একাডেমির আরও যারা আছেন তারা সবাই মিলে তারপরে আমাদের থিয়েটারের নেতৃত্বে যারা আছেন কামাল বায়েজিদ, তপন হাফিজ, শাহ আলম এরাও অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারা সেটা মানছিলেন না। পরে জামিল ভাই এসে মঞ্চে উঠে ঘোষণা দিলেন যে আমরা খুবই দুঃখিত এটার জন্য লজ্জিত যে আমাদেরকে এই শো টা বন্ধ করতে হচ্ছে…। তারপরে আমরা শোটা বন্ধ করে চলে এসেছি।”
মাসুম রেজা আরও বলেন, “আসলে পরিস্থিতি এমন ভাবে হয়ে গেছে এবং জামিল ভাই এসে বললেন বন্ধ করতে হবে কারণ আমি ওদেরকে বোঝাতে পারছি না তখন জাস্ট নাটকটা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আসলেই আমি আর কিছু ভাবতে পারিনি তখন।”
বিক্ষোভকারীদের পরিচয় বিস্তারিত জানা যায়নি। মাসুম রেজার লেখা নিত্যপুরান নাটকটি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মঞ্চায়ন হয়ে আসছে।