দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শাক-সবজির পাইকারি বাজার কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার। এই বাজারে এক পণ্য থেকেই করা হয় তিন দফায় চাঁদা আদায়। একবার খাজনা আবার একটু পরেই টোল! এরপর তো রয়েছেই আরো অজুহাতে টাকা আদায়। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্যই চাঁদা আদায়ের নিয়ম একই।
এসব কারণে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে দ্রব্যমূল্য। অবশ্য সমস্যা সমাধানে অভিযান চালিয়েছে টাস্কফোর্স।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে কুমিল্লা জেলা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স এই অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে নিমসারে সকল প্রকার খাজনা ও টোল আদায় স্থগিত করেছে প্রশাসন।
হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এই টোল এবং খাজনার টাকা আদায় বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বুড়িচং উপজেলার সহকারী কমিশনার ( ভূমি) সোনিয়া হক।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই বাজারের প্রতিটি দোকান থেকে ইজারার বাইরেও চাঁদার টাকা আদায় করা হয়।
স্থানীয় চাষিরা ঝুড়িতে করে শাক-সবজি বাজারে আনলে ঝুড়ি প্রতি অন্তত ৩০০ টাকা দেয়া লাগে চাঁদাবাজদের। এছাড়া যে কোনো ব্যবসায়ী অল্প পরিমাণে শাক-সবজি বিক্রি করলেও প্রতিমুঠা বা কেজি প্রতি টাকা দিতে হয়। যে কারণেই পাইকারি বাজার থেকে শাক-সবজি কিনে নিয়ে বাজারে অন্তত ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি ধরে বিক্রি করতে হয় সাধারণ মানুষের কাছে।
কুমিল্লার রাজগঞ্জ বাজারের কাঁচা শাকসবজি ব্যবসায়ী আলিমুল জানান, নিমসার থেকে সবজি কেনাবেচা করলে তিনবার খাজনা, টোল, চাঁদার টাকা দিতে হয়। যে বিক্রি করে তাকেও দিতে হয় টাকা, যে কিনছে তাকেও দিতে হয় চাঁদা। অপরদিকে একই পণ্য পরিবহনের জন্য পরিবহন টোলও আদায় করা হয়। যদি কোনো সবজির দাম কেজি প্রতি ৩০ টাকা হয় তাহলে অন্তত ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকাও খাজনা বা চাঁদা দিতে হয়।
লেবু ব্যবসায়ী নুরুল হক জানান, কিসের টাকা নেয় এটাই জানি না। কেউ রশিদ দেয় কেউ দেয় না। টাকা না দিলে আবার মারতেও আসে।
উল্লেখ্য, ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লার নিমসারে উত্তরের জেলাগুলো থেকে আসে শাক-সবজি, এসব সবজি আবার আড়ত থেকে বিক্রি হয় কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ দক্ষিন পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে। প্রতিদিন আড়তদার, পাইকারী ভাসমান বিক্রেতা এবং স্থানীয় প্রান্তিক চাষিসহ অন্তত ৫ হাজার বিক্রেতা এ বাজারে কাচা শাক-সবজির পসরা বসান।
এই পাইকারি বাজার থেকে বেশি মূল্যে কেনা হলেই খুচরা বাজারে দাম বাড়ে।