ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত জুলাই মাসে রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন। তার তিন মাস পর এখন আরও একবার রাশিয়ায় তিনি। এবার ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
তিন মাসের ব্যবধানে প্রধানমন্ত্রীর দু’বার রাশিয়া সফর থেকেই অনুমান করা যায় ভারতের কাছে রাশিয়ার গুরুত্ব কতখানি। এই গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করও। একই সঙ্গে বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন কেন ভারতের জন্য রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ।
এনডি টিভির ‘ইন্ডিয়া সামিটে’ তিনি বলেছেন, “আমি খুব সহজ কথায় বলব, আপনি যদি ইতিহাসের দিকে তাকান তাহলে দেখতে পাবেন ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পরে রাশিয়া কখনও এমন কিছু করেনি যা ভারতের স্বার্থে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমার মনে হয় এ কথার সঙ্গে কেউ দ্বিমত পোষণ করবেন না।”
“এটা একটা বড় বিবৃতি কারণ বিশ্বে এমন কোনও দেশ নেই যার জন্য এত বড় কথা বলা যায়।”
প্রসঙ্গত ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া সফরের আবহে তার এই মন্তব্য কিন্তু বিশেষ ইঙ্গিতবহ বলেই মনে করছেন ভারতীয় বিশ্লেষকরা। কেন রাশিয়া ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সে কথা বলতে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের ‘টানাপোড়েনের’ প্রসঙ্গও টেনে আনেন মি. জয়শঙ্কর ।
কোনওরকম রাখঢাক না করেই তিনি বলেছেন, “রাশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি কিন্তু একেবারে আলাদা। পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে।” “এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া যদি এশিয়ার দিকে আরও বেশি ঝুঁকে থাকে তাহলে আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করতে হবে যে এশিয়ায় কি রাশিয়ার একাধিক বিকল্প থাকা উচিত নয়? আর এশিয়ার দেশ হিসেবে আমাদের (ভারত) কি এশিয়ায় এমন কিছু করা উচিত নয়, যা আমাদের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে?”
“স্পষ্টতই রাশিয়া প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। উন্নয়নের এই পর্যায়ে তাদের সেই সম্পদ ভারতের পরিপূরক। আমরা তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের বড় ভোক্তা।” “মানুষ রাশিয়ার তেল নিয়ে কথা বলে, কিন্তু শুধু তেলই নয় … সার, ধাতু – এমন অনেক সম্পদেই সমৃদ্ধ ওই দেশ। সুতরাং এই সম্পর্কের পেছনে একটা বড় অর্থনৈতিক কারণও রয়েছে”, বলেন তিনি।
রাশিয়ার উপর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘আস্থা’
জয়শঙ্কর স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ঐতিহাসিক, ভূ-রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক – এই সমস্ত দিক থেকেই রাশিয়া ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তার কথায়, “আপনি যদি ইউরেশীয় ভূখন্ডকে দেখেন তাহলে দেখা যাবে রাশিয়া, চীন এবং ভারত এই তিনটে বড় দেশ রয়েছে। এই তিন দেশের মধ্যে পারস্পরিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রয়েছে। রাশিয়া কৌশলগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে আমাদের জন্য ভাল।”
“সুতরাং, (রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে) কৌশলগত যুক্তি রয়েছে, অর্থনৈতিক যোগ্যতা আছে এবং সামগ্রিকভাবে সম্পর্কের খুব ইতিবাচক ইতিহাসও রয়েছে। এবং একে (রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে) সেভাবেই দেখা হয়।”
ভারত-রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ‘সীমিত’ করার জন্য ভারতের উপর চাপ দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু সেই চাপের মুখে ভারত নতি স্বীকার করতে রাজি হয়নি। বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত করে ভারত।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত এবং রাশিয়া তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১০ হাজার কোটি ডলার। এই অঙ্ক ২০২৪ অর্থবছরে ৬ হাজার ৫৬০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। চলতি বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার আগে রাশিয়া-ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ হাজার ১০ কোটি ডলার। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে গতি বেড়ে যায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে। সেই সময় থেকে রাশিয়া ভারতকে তেলে ছাড় দেওয়া শুরু করে।
এদিকে এই সম্পর্কের বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলো আপত্তি জানালেও ভারত-রাশিয়ার সম্পর্কে কিন্তু কোনও প্রভাব পড়েনি। বরং ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল, কীভাবে পশ্চিমা দেশ ও রাশিয়া উভয়ের আস্থাই অর্জন করা যায়।
ভীতি কাজ করছে?
রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ হলেও সে দেশ নিয়ে কিন্তু ভারতের এক ধরনের ‘আশঙ্কা’ বা ‘ভীতি’ও রয়েছে। এর কারণ হলো চীন। ভারতের আশঙ্কা রাশিয়ার সঙ্গে চীনের নৈকট্য বাড়তে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও উল্লেখ করেছিলেন যে রাশিয়া এশিয়ার দিকে ঝুঁকছে। এই পরিস্থিতিতে এশিয়ায় কি রাশিয়ার অন্য বিকল্প থাকা উচিত নয়?
অর্থাৎ, এশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়া রাশিয়ার নজর যে চীনের দিকে পড়বে, সেই আশঙ্কা জয়শঙ্করেরও রয়েছে। এবং যদি তা হয়, তাহলে তা কোনও দিক থেকেই কিন্তু ভারতের স্বার্থের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে ভারতের যদি উদ্বেগ থেকে থাকে, তাহলে তা খুবই স্বাভাবিক।
দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক সফর, বাণিজ্যে বৃদ্ধি এবং রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্ব সম্পর্কে ভারত নীরব থাকতে পারে না। এদিকে শুধু চীনের সঙ্গেই নয়, এশিয়ার একাধিক দেশের সঙ্গে রাশিয়ার অংশীদারিত্ব বাড়ছে। সেই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার-ও।
হ্যাপিমন জেকব জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’-এর সহযোগী অধ্যাপক। ইংরেজি সংবাদপত্র হিন্দুস্তান টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন, “ভারতের প্রতিবেশীদের সঙ্গে রাশিয়ার অংশীদারিত্ব বাড়লে চীন পরোক্ষভাবে লাভবান হতে পারে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় চীন তার প্রভাব বাড়াতে পারে। বিষয়টাকে আপনি অন্যভাবেও দেখতে পারেন। রাশিয়া ও চীন যদি ভারতের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ায়, তাহলে তা ভারতের স্বার্থে প্রভাব ফেলবে।”
প্রতিবেদনে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, “আপনি যদি বিস্তৃতভাবে দেখেন তাহলে, রাশিয়া-ভারত সম্পর্কের উপর চীনের অদ্ভুত একটা প্রভাব রয়েছে। চীনের কারণেই রাশিয়া থেকে সরে আসছে না ভারত। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের (ভারতের) দূরত্ব বাড়লে পুতিন পুরোপুরি চীনের পক্ষে না হয়ে যান – এটাই ভারত চিন্তা করছে।”
“আর চীনের কারণে ভারতও কিন্তু রাশিয়ার উপর পুরপুরি নির্ভরশীল হতে চায় না। ভারত মনে করে, চীনের দিক থেকে চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে তাদের অন্য অংশীদার থাকা জরুরি। ভারতের বিরুদ্ধে চীনের আগ্রাসনকে রাশিয়া কতটা সমর্থন করবে সে বিষয়ে ভারত নিজেকে আশ্বস্ত করতে পারছে না”, বলছেন হ্যাপিমন জেকব।
ভারতের ‘আশঙ্কার’ কারণ
অধ্যাপক জেকব লিখেছেন, “ভারত বারবার আশ্বাস দিচ্ছে যে আমেরিকার সঙ্গে তার সম্পর্ক রাশিয়ার স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে না। রাশিয়া নিয়ে ভারত একটা রেড লাইন তৈরি করেছে এবং তার ফলে ভারত ইউক্রেনে আক্রমণের ক্ষেত্রে রাশিয়ার নিন্দা করেনি।”
অন্যদিকে, রাশিয়াও যে ভারতকে ‘মনে রেখেছে’ সে কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
হ্যাপিমন জেকব লিখেছেন, “চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়লেও ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভাঙতে দেয়নি রাশিয়া। দীর্ঘমেয়াদে চীনের কাছ থেকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে রাশিয়া, তবে তাৎক্ষণিক সুবিধার জন্য এই চ্যালেঞ্জগুলোকে উপেক্ষা করছে তারা।”
“অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদে ভারত নিজের স্বার্থ দেখলেও রাশিয়ার কাছ থেকে তাৎক্ষণিক লাভবান হচ্ছে ভারত। অর্থাৎ ভারত যেমন রাশিয়ার ব্যাপারে আমেরিকার সঙ্গে সীমা বেঁধে দিয়েছে, তেমনি রাশিয়াও ভারতের বিষয়ে চীনের সঙ্গে সীমা বেঁধে দিয়েছে।”
ড. রাজন কুমার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর রাশিয়ান অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ান স্টাডিজ’-এর সহযোগী অধ্যাপক। রাজন কুমার মনে করেন, ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্কের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকভাবে চীনের প্রভাব দেখা গিয়েছে।
রাজন কুমার বলছেন, “জয়শঙ্করের এই বক্তব্য যে ভারতের উচিত এশিয়ায় রাশিয়াকে বিকল্প সরবরাহ করা, এটা কিন্তু ভয়েরই প্রতিফলন। যাতে রাশিয়া পুরোপুরি চীনের কাছে না যায়।”
“ভারতের অন্য আশঙ্কা হল, এশিয়ায় চীন তো রাশিয়ার ঘনিষ্ঠই, এবার পাকিস্তানও যাতে তেমন ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে কিন্তু চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়া একটি ত্রয়ী হয়ে উঠতে পারে।”
ড. রাজন কুমার বলছেন, “চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ হয়েছে। চীনের ক্ষেত্রে রাশিয়া নিরপেক্ষ থাকলেও পাকিস্তানের বিষয়ে রাশিয়া ছিল ভারতের পক্ষে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে আমেরিকা ভারতের পাশে ছিল না এবং চীনের ক্ষেত্রে কিছুই করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে ভারত চেষ্টা করছে রাশিয়াও যেন অন্তত এই নীতিই অব্যাহত রাখে।”
“কিন্তু পৃথিবী দ্রুত বদলাচ্ছে। পারস্পরিক স্বার্থের কখন সংঘর্ষ শুরু হবে তা কেউ জানে না!”
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে সীমা
২০২৩ সালে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ১০ কোটি ডলার। ঐতিহাসিকভাবে দুই দেশের বাণিজ্যের নিরিখে এটা ছিল রেকর্ড।
২০২১ সালে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার, যা সে সময় নজির গড়েছিল। ২০১৪ সালে কিন্তু চীন ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র ৯ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার।
এখন বিষয়টা হলো, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ৬,৫০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য চীন ও রাশিয়ার ২৪ হাজার কোটি ডলারের নিরিখে অনেকটাই কম। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে টিঁকিয়ে রাখা হবে সেটা ভারতের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ।
ভারত-রাশিয়ার মধ্যে যে ‘আস্থা’র সম্পর্ক রয়েছে তা কিন্তু ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের সম্পর্কে নেই। তা সত্ত্বেও ওই দুই দেশের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের) সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি।
রাশিয়ার প্রতি ভারতের আস্থা ঐতিহাসিক হলেও ২০২১ সাল পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র ১০০০ কোটি ডলার।
এখন বাণিজ্য যে বেড়েছে সেখানে সবচেয়ে বড় অংশ হলো জ্বালানি। অর্থাৎ ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, তাই বাণিজ্যের আকার বেড়েছে।
কার্নেগি মস্কো থিংক ট্যাংকের পরিচালক দিমিত্রি ট্রেনিন ২০২১ সালে মস্কো টাইমস-এ একটা প্রতিবেদন লিখেছিলেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, “ভারতের অর্থনীতির ৮৫ শতাংশই এখন ব্যক্তি মালিকানাধীন। অন্যদিকে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দুই সরকারের মধ্যকার চুক্তির ওপর নির্ভরশীল।”
“১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকেই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভারত সোভিয়েত ইউনিয়নের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ছিল, তবে ২০২১ সালে ভারত রাশিয়ার ২৫তম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ছিল।”