Homeজেলাশেরপুরে বিনা সুদে ঋণের প্রলোভন প্রতারক চক্রের

শেরপুরে বিনা সুদে ঋণের প্রলোভন প্রতারক চক্রের

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।।

লুণ্ঠিত অর্থ উদ্ধার করে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হবে গরীব মানুষদের। এজন্য রবিবার মাইকিং করা হয়েছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গ্রামে গ্রামে। সোমবার সকাল থেকে শত শত নারী পুরুষ নির্ধারিত স্থানে আসলেও দেখা মেলেনি আয়োজকদের। এর আগে গ্রামে গ্রামে টাকার বিনিময়ে হাজার হাজার সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপস্থিত জনসাধারন।

সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়ার শেরপুর, শাজাহানপুর, নন্দীগ্রাম, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ উপজেলা থেকে শত শত মানুষ সমবেত হচ্ছেন বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের শেরপুর সরকারি ডি. জে. মডেল হাইস্কুল খেলার মাঠে। তাদের দাবি অহিংস গণাভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনের আহবানে তারা এখানে এসেছেন। প্রায় একবছর ধরে সংগঠনের নির্ধারিত একটি ফরমে সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এরজন্য ২০ টাকা থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার করে বিনা জামানত ও সুদে এক লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে সদস্যদের। সেই টাকা তারা প্রতি লাখে মাসিক এক হাজার টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করবেন। কিন্তু নির্ধারিত স্থানে ও সময়ে আয়োজকদের না পেয়ে হতাশ ও বিক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে গেছেন তারা।

শাহজাহানপুর উপজেলার কচুয়াদহ গ্রামের কল্পনা আক্তার (৪২) বলেন, প্রায় ৬ মাস আগে কিছু মহিলা আমাদের গ্রামে যায় ফরম পূরণ করার জন্য। আমাদের গ্রামের প্রায় ৭শ মানুষ এই সংগঠনের সদস্য হয়েছে। সবার কাছ থেকে ৩০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। আজ আমরা প্রায় দেড়শ জন এসেছি।

শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের বিরাকৈর গ্রাম থেকে এসেছেন প্রায় একশ জন। তাদের কাছ থেকে সদস্য ফি ২শ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই গ্রামের আনোয়ারা বেগম (৫৫)। গাড়িদহ ইউনিয়নের জোয়ানপুর গ্রামের আলামিন বলেন তাদের গ্রামের প্রায় ৫শ জনের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।

শেরপুর পৌর শহরের টাউন কলোনী এলাকার হাফিজার রহমান (৪০) বলেন, প্রায় ৬ মাস আগে ৩০ টাকা দিয়ে সদস্য হয়েছি। গতকাল মাইকিং শুনে এখানে এসে আজ কাউকে পাচ্ছি না।

উপস্থিত অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিনা জামানত ও সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলে গত এক বছর ধরে হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্র। তবে কারা এই চক্রের হোতা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। যারা এই ফরম পূরণ করেছেন তাদের কেউ চেনে না। তবে উপস্থিত একজনের কাছে পাওয়া যায় একটি মোবাইল নম্বর। তার সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি নিজেকে শাহানাজ আফরিন সুমি বলে পরিচয় দেন।

সুমি জানান, তিনি একা নন। তারা প্রায় ৩শ জন মিলে শেরপুরে কাজ করছেন। “অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমূখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা’- এর মাধম্যে দুর্নীতি বিরোধী বিশেষ আইন প্রণয়নের জন্য তারা আন্দোলন করছেন। আইন পাশ হলে সদস্যদের ঋণ দেওয়া হবে বলে তিনি বলেন।

তিনি আরও বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান সহ অনেকেই উপস্থিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু অসুস্থতার জন্য কেউ আসেনি। তাছাড়া সমাবেশ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া যায়নি। তাই সাবইকে ফিরে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক খান বলেন,”সমাবেশের অনুমতি চেয়ে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা বেগম একটি আবেদন করেছিলেন। কিন্তু দেওয়া হয়নি। তাদের প্রতারণা সংক্রান্ত কোন অভিযোগ আমার জানা নেই। তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version