তীব্র দারিদ্র্যতায় রয়েছেন বিশ্বের ১০০ কোটি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই আফ্রিকা-দক্ষিণ এশিয়ায়। আর বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ, যাদের মধ্যে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ অতি মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
জাতিসংঘের বৈশ্বিক বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক, ২০২৪ এর প্রতিবেদনে উঠে এ তথ্য এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে মানুষের জীবনযাত্রার মান। এক্ষেত্রে দারিদ্র্য সূচকে দেশটির মান ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ। শিক্ষায় ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ ও স্বাস্থ্যে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ। সবমিলিয়ে দেশের চরম দারিদ্র্যে অতি মানবেতর জীবন যাপন ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে দারিদ্র্যের স্তর অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে উল্লেখযোগ্য বেশি। এসব দেশে পুষ্টি, বিদ্যুৎ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ক্ষেত্রে বড় বৈষম্য দেখা গেছে। চরম দারিদ্র্যে বসবাস করা ১১০ কোটির মধ্যে ৪৫ কোটি ৫ লাখ মানুষ সংঘাতের ছায়ায় রয়েছেন। সূচকে, ১৮ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫৮ কোটি ৪০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে।
বিশ্বের চরম দারিদ্র্যে বাস করা প্রায় অর্ধেক মানুষই ভারতে। দেশটির ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে ২৩ কোটি ৪০ লাখই চরম দারিদ্র্যে দিন কাটাচ্ছেন। এর পরে রয়েছে পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো। দারিদ্রে দিন কাটানো ১১০ কোটি মানুষের প্রায় অর্ধেক এই পাঁচ দেশের।
বহুমাত্রিক দারিদ্র্য পরিস্থিতি বুঝতে জাতিসংঘ বিশ্বের ১১২টি দেশের ৬৩০ কোটি মানুষের ওপর গবেষণা করেছে। তাতে ২০২২–২৩ বছর পর্যন্ত এক দশকের বেশি সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। এতে পর্যাপ্ত আবাসন, পয়োনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ভোজ্যতেল ও পুষ্টির মতো মৌলিক মানবিক সেবাসমূহ পাওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি কেমন, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। শিশুদের স্কুলে উপস্থিতির হারও বিবেচনায় এসেছে।
এদিকে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের সর্বশেষ তথ্যমতে, দেশের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন। তাঁদের মধ্যে অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন ৫ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ।
সর্বশেষ জনশুমারি অনুসারে, দেশে বর্তমানে জনসংখ্যা আছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার। সে হিসাবে, দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ১৭ লাখ ৫৭ হাজার।