সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আবারও পিছিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে ১১২ বার পিছিয়ে নতুন তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৮ নভেম্বর। আজ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও বরাবরের মতোই সময় চায় র্যাব। এদিকে মামলাটি র্যাবের কাছ থেকে হস্তান্তরের বিষয়ে আদালতের নির্দেশের বিষয়েও কোনো তথ্য দেয়নি সংস্থাটি।পরে ঢাকা অতিরিক্ত প্রধান মহানগর হাকিম মো. মাহবুবুল হক তদন্ত প্রতিবেদনের নতুন তারিখ ধার্য করেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট তদন্তের দায়িত্ব থেকে র্যাবকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ওই দিন হাইকোর্ট সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে কি না, এ-সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদনও মামলার নথিতে দাখিল করা হয়নি।
ঢাকার প্রধান মহানগর হাকিম আদালতের শেরেবাংলা নগরের সাধারণ নিবন্ধন কার্যালয় থেকে এসব বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার ওরফে মেহেরুন রুনি দম্পতি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় খুন হন।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে। চার দিনে কোনো রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারায় মামলার তদন্ত মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি পুলিশ। কিন্তু তারাও রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল র্যাব তদন্তভার গ্রহণ করে। গত ৯ বছরের বেশি সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি কোনো সংস্থা। এমনকি এই হত্যাকাণ্ডের কোনো রহস্যই উদ্ঘাটন করতে পারেনি।
হত্যাকাণ্ডস্থল থেকে উদ্ধার করা আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য বহু অর্থ ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু রহস্য উদ্ঘাটনের ফল শূন্যই থাকে। তদন্ত সংস্থা মাঝে মাঝে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে জানায়, রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ চলছে। তদন্ত সংস্থার ওই ধরনের প্রতিবেদনের মধ্যেই মামলার তদন্ত সীমাবদ্ধ রয়েছে।