শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে ভারত ও কানাডার মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। এরই মধ্যে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে। তবে অটোয়ার বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির পদক্ষেপকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় হত্যা করা হয় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারকে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ করে খালিস্তানপন্থিরা। সে সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ওই হত্যার সঙ্গে ভারত জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। এমনকি ওই হত্যা তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য নয়াদিল্লিকে অনুরোধও জানান।
ওই ঘটনায় কানাডায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার ও কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছে অটোয়ার গোয়েন্দা সংস্থা। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। এর মধ্যে অটোয়া থেকে নিজেদের হাইকমিশনারকে প্রত্যাহার করার কথা জানিয়েছে ভারত। কানাডা সরকারের নিশানায় থাকা কূটনীতিকদেরও ফেরত আনা হচ্ছে।
সোমবার নয়াদিল্লিতে থাকা কানাডীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে ভারত। তাদেরকে দ্রুত দেশ ত্যাগ করতেও বলা হয়েছে।
একই দিন অটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, নয়াদিল্লি থেকে কানাডার কূটনীতিকদের বহিষ্কার অগ্রহণযোগ্য।
তিনি বলেন, সার্বভৌম কানাডার মাটিতে হামলার ঘটনায় কূটনীতিক এবং এজেন্টদের ব্যবহার করে ভারত মস্ত বড় ভুল করেছে।
ট্রুডো জানিয়েছেন, কানাডার মাটিতে কানাডার নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়া তার প্রথম এবং প্রাথমিক কর্তব্য। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা তার কাজ। অন্য কোনো দেশ তার দেশে এসে হত্যার ঘটনা ঘটাবে, তা তিনি কোনোভাবেই মেনে নেবেন না।
তিনি বলেন, হরদীপ সিং হত্যা সম্পর্কে তদন্তে আমরা যা জানতে পেরেছি, তা সবই ভারতকে জানিয়েছি। আমি সরাসরি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। কিন্তু ভারত সরকার সবকিছু অস্বীকার করেছে, আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছে এবং কানাডা সরকারের সততাকে আক্রমণ করেছে।
ট্রুডো অভিযোগ করে বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে কানাডার কর্মকর্তারা একাধিকবার ভারত সরকারের সহযোগিতা চেয়েছিল, কিন্তু ভারত কোনো সহযোগিতা করেনি। এতে আমাদের তদন্ত বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
ট্রুডো জানান, এই সপ্তাহে আমাদের কর্মকর্তারা ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং নিজ্জার হত্যার সঙ্গে ভারতীয় ছয়জন এজেন্ট জড়িত থাকার কথা জানিয়েছেন।
কানাডা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক ফাটল তৈরি করতে চায়নি বলেও মন্তব্য করেন ট্রুডো। তিনি বলেন, ‘ভারত ও কানাডা দুই দেশের মানুষের মধ্যেই ঐতিহাসিকভাবে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।’